গুচ্ছ কবিতা – বিপুল অধিকারী

By Published On: October 1, 2022

এন্ড্রয়েড হারানোর পর

সামনে মরা নদ;
জল নেই, স্রোত নেই-
তবু, মনে শঙ্কা হতেছে উদয়।

পিঠমোড়া দুই হস্ত আমার,
পদযুগলে পড়েছি শিকল; বান্ধা মুখেতে এঁটেছি কুলুপ।
শুধু চোখেতে আগুন, বুকেতে বল আছে সঞ্চয়!

সামনে মরা নদ;
জল নেই, স্রোত নেই-
তবু, মনে শঙ্কা হতেছে উদয়।

লাপাত্তা এন্ড্রয়েড, মস্তিষ্ক যে শুন্য,
গুগল মিছে তাই হতেছে হন্যে;
সাদাপাতা মশগুল কুটিল হাস্যে-
তৃষ্ণাসস্কুল চৌদিক একি মরতেছে যে জলের জন্যে!

মরা নদ, আমি একা;
দুরুদুরু, দেখতেছি-কী হয়, কী হয়!!

লবন আসক্তি

কাঁচালবন খেতে মানা;
ডাইনিংয়ে সদা সতর্ক, গৃহিণীও নাছোড়।
আমি যে কাঁচালবনেই আছি বেঁচে
সংগোপন অভিসারে পরকীয়ার মতন,
অন্তরযামী জানে তাহা-এই আসক্তিঘোর!

বিলম্বিত বর্ষায়

বর্ষাকাল;
খালি গোছল করতে মন চায়!
বারান্দায় ভেজা কাপড়,
বৃষ্টির ছাঁট;
টবের গাছ, মনে হয়, বেজায় খুশী।

আমি এসব দেখছি;
বৃষ্টি বাড়ছে,
সানসেটে গড়ালো জল,
বেদম পতন।

ট্রাউজারে হাত রাখি,
দৃষ্টিতে আটকা পড়ে ওয়ারড্রবের লক;
বাথরুমের কল,
সেখানে টপটপ শব্দ,
কে শোনে?
সিথান খালি!

অথচ
ভিজে যাচ্ছে চরাচর;

এই বর্ষাকাল,
বিলম্বিত,

বিষাদ আমাকে

বিষাদ আমাকে গোলাচ্ছে;
পোয়াতির মত বমি বমি,
খেতে ভাল্গাচ্ছে না কিছু!

দূর হ সব; দূর হ,

সব যেন মাছের প্রাণ,
জলের বাইরে জীবন নাই;
একটা অর্ধমৃত করতোয়া,
হঠাৎ রাক্ষুসী; কী ভাবে?
কত দিনের সঞ্চিত ক্ষুধা এ,
কত দিনের হা-মুখ!

বিষাদ আমাকে পোড়াচ্ছে;
অনন্ত এই বিষাদ!
মুখে একদম স্বাদ নেই।

দূর হ সব; দূর হ-
যা দেবী সর্বভুতেষু

এই দৌড়

এই দৌড়,
মাছেদের সাঁতারের চে’ কুটিল-, আর নির্বান্ধব বড়;
এই এক হুতাশন এই এক আহাজার;
অথচ, মাছেদের সাঁতার নির্মল আনন্দময়!

এই দৌড়,
প্রতিযোগিপূর্ণ, নিরানন্দ, কাঠখোট্টা মজ্জাহিন;
ট্রাফিক সিগন্যাল, সে বড় খবিশ।

মাথার ভেতর বেজে চলে বায়োমেট্রিকের টিকটিক,
দু’চোখে নিñিদ্র যানস্রোত এই,
দূরে সীমানা নির্দিষ্ট-, লাল হলুদ সবুজ;

এই জঙ্গলে,
তাই মাছেদের কথা মনে পড়ে;
এই সকালে, এই জনস্রোতে
মনে পড়ে আর জলের জীবন!

দৈবাৎ সিগন্যাল খুলে গেলে,
ধন্দে বিরাট ঝাঁকুনি লাগে-, দেখি, ফেঁসে আছি
এই দৌড়ে, হায়!

দেখি না উপায়

প্রেম

তুমি যে ভাবে চাও,
আমি পারি না;
আমি যে ভাবে চাই,
তুমি পারো না।

এ ভাবেই
আমি তোমার গলায় ঝুলে আছি,
তুমিও আমার গলায় দিব্যি ঝুলে আছো।

কেন জেগে আছো গো, মা
বিপুল অধিকারী

এত এত ব্যথা বুকের ‘পর চেপে বসে আছে, এত এত
রোদন, বুকভাঙা আর্তনাদ-, তারপরও কেন, এ বুকের
‘পর রক্তচক্ষু জল্লাদের মত চেপে বসে গলায় ধারালো
ছুরি চালাও উপর্যুপরি? কেন এই নির্মমতা ? কেন ?

কেন জেগে আছো গো, মা-
কেন চেয়ে আছো মুখো পানে ?

Share:
0 0 votes
Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Nandik Shop