বাতাস বৃত্তান্ত
 
Notifications
Clear all

বাতাস বৃত্তান্ত

1 Posts
1 Users
1 Reactions
239 Views
(@martin)
Newbie Author
Joined: 2 years ago
Posts: 5
Topic starter  

প্রত্যেক ঘটনারই একটা কারণ থাকে। কারণটা অজানা থাকলে অনেকের কাছেই তা অলৌকিক বলে মনে হয়, তেমনি অনেকের জানার ইচ্ছা প্রবল হয়। বাতাস নিয়েও অনেকের আছে অনেক প্রশ্ন, কারো আছে বিশ্বাস। যেমন, বাতাস আসলে কি? বাতাসের জন্ম কিভাবে হলো? কিভাবে এটি অবস্থান করে বা থেকে যায়? কিভাবে বাতাস প্রবাহিত হয়?

এসকল প্রশ্নের উপর ভিত্তি করেই খুব সংক্ষেপে বাতাসকে বোঝার চেষ্টা করবো, যদিও এটি নতুন কোনো আবিষ্কার নয়। যারা মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখেন, তারা হয়তো বিষয়টি আরো গভীর ভাবে তুলে ধরতে পারবেন।

 

বাতাস আসলে কী?

মূলত সমগ্র মহাবিশ্বই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরমাণুর সমাবেশ। বাতাস, প্রাণ-প্রকৃতি এমনকি মানুষও এর বাইরে নয়। অর্থাৎ আমাদের চারপাশের সবকিছুই অণু-পরমাণুর ভিন্ন ভিন্ন রূপ। ঘনত্বের তারতম্যের কারণে পদার্থের তিনটি রূপ পরিলক্ষিত হয়। কঠিন, তরল ও বায়বীয় বা গ্যাসীয়। পদার্থের অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের অবস্থানই গ্যাসীয় অবস্থা। বাতাস মূলত বিভিন্ন পরমাণুমিশ্রিত পদার্থের একটি গ্যাসীয় অবস্থা। বর্তমান পৃথিবী পৃষ্ঠের বাতাস ৭৮.০৯% নাইট্রোজেন, ২০.৯৫% অক্সিজেন, ০.৯৩% আর্গন, ০.০৩% কার্বন ডাই অক্সাইড, ১% জলীয় বাষ্প এবং সামান্য পরিমাণে অন্যান্য গ্যাস নিয়ে গঠিত। যদিও শুরুতে এমন ছিল না।

বায়ুমণ্ডলের চার ভাগের তিন ভাগই আছে ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটারের মধ্যে। আরও দূরে যেতে থাকলে ক্রমেই ছোট হয়ে আসে বায়ুর পুরুত্ব।

ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি এসা (ESA) জানিয়েছে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একেবারে বাইরের অঞ্চলের নাম জিওকরোনা। এটা মূলত হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। যার বিস্তৃতি ৬ লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটার। দূরত্বটা পৃথিবীর ব্যাসের ৫০ গুণ। তার মানে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে পাক খাচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতরে থেকেই।

 

বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি ও বিবর্তন

৪.৫৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে সূচনা হয়েছিল আমাদের এ পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহের। উত্তপ্ততার কারণে আদি পৃথিবীতে ছিলনা কোনো বাতাস কিংবা সাগর। পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের প্রকৃতি বিবর্তিত হতে হতে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, সৃষ্টির আদিপর্বে পৃথিবী ছিল একটি উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিণ্ড। এই গ্যাসীয় পিণ্ড কালক্রমে তাপ বিকিরণ করে ঘনীভূত হয়ে, কেন্দ্রে একটি তরল কেন্দ্রমণ্ডল এবং এর চারপাশে ঘনত্বের তারতম্য অনুযায়ী বহিঃস্তরগুলি গঠিত হয়। অবশিষ্ট গ্যাসগুলি ঘনীভূত না হওয়ায় তরল বা অর্ধতরল অবস্থায় পৃথিবীর ওপর ভেসে বেড়াতে শুরু করে এবং দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যায়।

সময়ের পরিক্রমায় তাপমাত্রা কমতে থাকলে, পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের তরল শিলায় আবদ্ধ গ্যাসসমূহ আগ্নেয়গিরির আউটগ্যাসিং এবং বিশাল বিশাল গ্রহাণু বা পর্যপ্ত জল বহনকারী উল্কাপিন্ড দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় সময় উত্পাদিত গ্যাস বিমুক্ত হয়ে বায়ুমণ্ডলের জন্ম হয়। প্রাথমিক এই বায়ুমণ্ডল, ১০-১৫% কার্বন ডাইঅক্সাইড, ৮-১০% নাইট্রোজেন ও ৬০-৭০% জলীয় বাষ্প দ্বারা গঠিত ছিল। তখন মুক্ত অক্সিজেনের কোনো অস্তিত্ব ছিল না।

পরবর্তী সময়ে তাপ বিকিরণ করে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হলে আকাশে বিপুল পরিমাণ মেঘের সঞ্চার ঘটে। এই প্রক্রিয়া লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে থাকে। জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়ে উত্তপ্ত পৃথিবীর আকর্ষণে ছুটে আসে এবং পৃথিবীপৃষ্ঠকে স্পর্শ করার পূর্বেই বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। অনুমান করা হয়, এই প্রক্রিয়া  লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে থাকে। পৃথিবীপৃষ্ঠ শীতল হলে, অবিরাম বারিবর্ষণের ফলে, পৃথিবীর অবনমিত অঞ্চলগুলি জলে পূর্ণ হয়ে সৃষ্টি হয় বারিমণ্ডল এবং উত্থিত অংশগুলি মহাদেশের অংশরূপে অবস্থান করতে থাকে। এই বৃষ্টির ধারা বায়ুমণ্ডল থেকে কেবলমাত্র জলীয় বাষ্পকেই স্থানান্তরিত করেনি, বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইডকে মুক্ত করে সমুদ্রবক্ষে প্রচুর পরিমাণে কার্বনেট শিলার জন্ম দিয়েছে।

এমন সময়ে বায়ুমণ্ডলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা স্তর তৈরি হলো – ওজোন স্তর। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে পানির অণুগুলো হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন পরমাণুতে ভেঙে যাচ্ছিলো। অক্সিজেন পরমাণুগুলো অক্সিজেন অণুর বদলে ওজোন অণুতে পরিণত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠের ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার ওপরে একটা স্তর তৈরি করলো। পরবর্তী প্রাণের জন্য এই স্তর ছাতা হিসেবে কাজ করেছে, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে এরাই প্রাণকে বাঁচিয়েছে।

ভূ-রাসায়নিক গবেষণায় দেখা যায় যে পৃথিবী গঠনের প্রায় ২ বিলিয়ন বছর পরে অক্সিজেন বায়ুমণ্ডলের একটি উপাদান হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ সাধারণ জীবের সালোকসংশ্লেষণ করার ক্ষমতা বিকশিত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক বায়ুমণ্ডলে কোন অক্সিজেন ছিল না।

আবিষ্কৃত হলো প্রথম ক্ষুদ্র জীব, সায়ানোব্যাকটেরিয়ার ফসিল। এই সায়ানোব্যাকটেরিয়াগুলোই একমাত্র আদিকোষবিশিষ্ট প্রাণ, যারা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাদ্য সরাসরি তৈরি করতে পারে! এদের কোষের বাইরের দিকে যে আবরণ থাকে, সেই আবরণের ভাঁজে ভাঁজে এই সালোকসংশ্লেষণ ঘটে।

সায়ানোব্যাকটেরিয়ার দল বাতাসের কার্বনডাইঅক্সাইড ও সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের সময় প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন উৎপন্ন করে, যারফলে পৃথিবীতে ক্রমান্বয়ে এলো সবুজ উদ্ভিদের সমারোহ। ক্রমাগত বায়ুমণ্ডলকে অক্সিজেনের জোগান দিয়ে সবুজ উদ্ভিদই পৃথিবীতে প্রাণের প্রাচুর্য ঘটায়।

এখন প্রশ্ন হলো, আদিকোষ তবে কি? কিভাবে প্রথম কোষ বা প্রাণের সৃষ্টি হলো?

বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রগর্ভে উল্কাপাত এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় নির্গতকিছু রাসায়নিক উপাদান একত্রিত হয়ে আদি-কোষ গঠিত হয়। কোন অনুকূল পরিবেশে আরএনএর সুতোর মত প্রান্ত একই প্রক্রিয়ায় এনজাইমের সাহায্য ছাড়াই আরএনএ’র প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে পারে। এভাবেই প্রথম প্রাণ আরএনএ থেকে জীন সংগ্রহ করত। লুই পাস্তুর (১৮২২ - ১৮৯৫) মত প্রকাশ করেন যে, জীবন স্বতঃস্ফূর্তভাবে গঠিত হতে পারে। অবশেষে অসংখ্য গবেষণার পরে  বিজ্ঞানীরা আদি-কোষ সৃষ্টি করলেন, সেগুলো আগের কোষের গায়ের বাইরের সংলগ্ন মলিকিউল থেকে জীন বহন করে এবং কোষের প্রতিলিপি সৃষ্টির প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে চলতে থাকে।

এই এককোষী প্রাণী থেকে-ই পরবর্তীতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বহুকোষী প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছে! বিবর্তনের এক পর্যায় সৃষ্টি হয়েছে সায়ানোব্যাকটেরিয়া।

 

বায়ুমণ্ডল গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে নাইট্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ ছিল মাত্র ৮-১০%। আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮-০৮৪%। বাতাসে বিপুল পরিমাণে মুক্ত নাইট্রোজেন সংযুক্ত হওয়া ও ভারসাম্য রক্ষার পিছনে যে কারণগুলি বর্তমান সেগুলি হল – ১. আগ্নেয় শিলা বিয়োজনের ফলে সৃষ্ট মুক্ত নাইট্রোজেন, ২. আগ্নেয়গিরি থেকে অক্সাইড রূপে নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন ও বিয়োজন ৩. সিউডোমোনাস ও প্যারাকক্কাস-এর মতো কিছু ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া জীবজ নাইট্রোজেনকে প্রাণীদেহ থেকে বায়ুমণ্ডলে মুক্ত নাইট্রোজেনরূপে নির্গত করণ।

অন্যান্য গ্রহেও বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্ব রয়েছে। মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল অপেক্ষাকৃত পাতলা। এর ঘনত্ব পৃথিবীর  বায়ুমণ্ডলের মাত্র ১ ভাগ। কারণ, মঙ্গলগ্রহের আকার পৃথিবীর আকারের প্রায় অর্ধেক। ফলে, দুর্বল মধ্যাকর্ষণের কারণে বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসগুলো মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন প্রভৃতি বড় গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, মিথেন ও অ্যামোনিয়া রয়েছে।

তাই বলা যায়, একমাত্র আমাদের পৃথিবীতেই মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর বেঁচে থাকার মতো বায়ুমণ্ডল আছে। কিন্তু এখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এক নতুন সমস্যার মুখোমুখি- তা হলো, বাতাসে অধিক হারে কার্বন ডাই-অক্সাইড জমা হতে থাকা। কার্বন ডাই-অক্সাইড বাড়লে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বাড়ে। শুধু তা-ই নয়, জলবায়ু বিপর্যয়ও দেখা দেয়।

 

বাতাস কিভাবে ভূপৃষ্ঠে আবদ্ধ থাকে?

পৃথিবী বা গ্রহের বাইরে মহাশূন্যে কোনো বাতাস নেই। কারণ বায়ুমণ্ডল থাকতে হবে কিছু একটাকে কেন্দ্র করে। বাতাস ভূপৃষ্ঠে আবদ্ধ থাকবার কারন পৃথিবির মধ্যাকর্ষন বল। এই মধ্যাকর্ষন বল পৃথিবির বায়ু মন্ডল কে ধরে রেখেছে।

কোন গ্রহ যেমন পৃথিবী থেকে কোন বস্তু এর মাধ্যাকর্ষণ ভেদ করে এর থেকে বের করে দিতে হলে। এর যে মুক্তিবেগ বা তার থেকে বেশী বেগে ছুরতে হবে। তাই অনেক জোরে বুলেট ছুরলেও সেটা পৃথিবী ভেদ করে চলে না গিয়ে আবার পৃথিবীতেই ফিরে আসে। আর পৃথিবীর জন্য এই বেগ হলো ১১.২ কিঃমিঃ/সেকেন্ড। এই বেগ নির্ভর করে থাকে কোনো গ্রহের ভরের উপর। তাই ১১.২ কিঃমিঃ/সেকেন্ড এর কম গতিসম্পন্ন কোনো বস্তুই পৃথিবী থেকে বের হয়ে যেতে পারবে না। সুতরাং বাতাস এই বেগ অর্জন করতে না পেরে আমাদের পৃথিবীর সাথেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

 

বাতাস কেন প্রবাহিত হয়?

পদার্থের সকল অবস্থাই মহাকর্ষ বল দ্বারা প্রভাবিত। এবং গতি পথ নির্ণীত হয় অভিকর্ষ দ্বারা। অভিকর্ষ বলটা কাজ করে কম অভিকর্ষ থেকে বেশি অভিকর্ষের দিকে। নদীনালা সৃষ্টির প্রধান কারণ এই অভিকর্ষ।

তাপমাত্রা, জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি, চাপ ইত্যাদির কারনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার বায়ুচাপের তারতম্য সৃষ্টি হয়। এবং বায়ু উচ্চ চাপ এলাকা থেকে নিম্ন চাপের এলাকায় প্রবাহিত হয়।

বায়বীয় বা গ্যাসীয় পদার্থের তাপমাত্রার সঙ্গে চাপের একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে। সম্পর্কটা সমানুপাতিক। তাপ বাড়লে চাপ বাড়ে, আবার তাপ কমলে চাপ কমে যায়।

সূর্যের তাপে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়। আমরা জানি, পৃথিবী নিজ অক্ষ ও সূর্যের চারপাশে সর্বদা ঘূর্ণায়মান। এ কারণে পৃথিবীর সব জায়গায় সমানভাবে সূর্যের আলো পড়ে না। ফলে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সবজায়গায় সমানভাবে উত্তপ্ত হয় না। তাই বায়ু চাপও সব জায়গায় সমান হয় না। বায়ুর ধর্মই হলো বায়ু, অধিক উষ্ণ স্থান থেকে শীতল স্থানের দিকে প্রবাহিত হয়, আর একারণেই তৈরি হয় বায়ুপ্রবাহ।

কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেলে সেখানকার বায়ু বেশ হালকা হয়ে যায়। হালকা বায়ু দ্রুত ওপরে উঠে গেলে ওই অঞ্চলে তৈরি হয় একধরনের শূন্য স্থান। এই শূন্যতা পূরণ করতে চারপাশ থেকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বাতাস ছুটে আসে। তৈরি হয় প্রচণ্ড ঘূর্ণিপাক। এই ঘূর্ণিপাককেই বলে ঘুর্ণিঝড় বা টর্নেডো।

 

সূত্র: গুগল

This topic was modified 7 months ago by Clementh Martin Baroi

   
Quote
Share: