গুচ্ছ কবিতা – আমিনুল হীরা

By Published On: October 1, 2022Views: 301

আবদার

আবদার নগ্নতা নয়, সার্বজনীন চাহিদা
বিশ্বাস, প্রেম আর শ্রদ্ধায় জন্মে দীর্ঘশ্বাস
সময় ফুরোনোর সাথে মনে থাকবে শুধু মুহূর্ত
কথা তেতো মনে হলেও সত্য
আজকালকের মানুষের কথা
ঠিক যেন বেলুনের মতো,
এই ফুলে যাওয়া তো চুপসে যাওয়া।
কিন্তু কথা হবে পারমাণবিক বোমা,
বের হবে তো আর ফিরবে না
এর জন্যই গন্ডগোল!
ভাবনার দ্বার বন্ধ, অগোছালো পথ দিক নেই
আর চুম্বনের চেয়ে এখানে ওষ্ঠ চেপে ধরা সাবলীল
পাহাড়ের মতো আঁকাবাঁকা মানুষের কথা,
কে কোথায় মিলবে?
পায়ের ছন্দ নেই,গলায় সুর নেই,
বেহুদা কথার সঙ্গে ঘৃণিত আচরণ
থমকে দেয়, আবার চালিয়ে নেয়
এটি বিস্ময়কর নয়, সার্বজনীন!
বিশ্বাস, প্রেম আর শ্রদ্ধায় জন্মে দীর্ঘশ্বাস
থাকে আবদার, ভানের মধ্যে সত্যের চাষ…

ফিরে এসো

মাটির গন্ধ, ঘাসে জমানো ভোরের শিশির
তোমার শরীরের উষ্ণতায় ব্যথাতুর হ্নদয়ে
অপেক্ষার প্রহরে গুণে নিশি জাগিয়ে রয়
উদযাপিত দিনক্ষণে।
তুমি সুস্থ হলে নদীতে আসবে বাণ, মাঝি তুলবে গান
তোমার কথার সাথে স্রোতের বিচ্ছিন্ন বাঁকের হবে অবসান,
হ্নদয় হ্নদয়কে জেনেছে গোপন আলাপনে প্রেমের লীলায়,
চিরতর যেখানে পথ ফুরোবে গোলাপের ছোঁয়ায়, অথচ তুমি নীরব,
চোখের কোণে জমেছে মেঘ,
উদযাপিত দিন আজ দুঃখ হয়ে ভাসছি সেই মেঘমালায়।
ফিরে এসো জেগে উঠো মেতে উঠবো শান্তিনিকেতন কিংবা
রবীন্দ্র কাচারির মুক্ত অঙ্গনে।
সময় হয়ে উঠুক তোমার প্রাণ ভোমরা,
মিশে যাবে মন ঘাসে জমা ভোরের শিশিরের মতন।

বৃথা

শরীরের অংশ মস্তিষ্ক তার ভেতর বিবেক,
এর বিচারে মানুষ চলে ঈশ্বরের খোঁজে।
স্বপ্নের কি দেশ আছে? পূর্ণতার পূর্ব লিখনে এতো অশ্রু কেন?
চাওয়ার সাথে যোগহীন মনের টানাপোড়েন ঘুচিয়ে যাবে কিসে,
সবই তো চামড়ার আড়ালে বসবাস
অস্তিত্বের বিশ্বাস স্বপ্নকে দূরে ঠেলেছে কলঙ্কিত ভদ্রের মতন।
যাহা চাই তাহা পেতে উজাড় করে দিই তবে ঈশ্বরকে পাওয়া এতো সহজ নয়,
আর ঈশ্বরকে না পেলে মস্তিষ্কের অবক্ষয় স্বপ্নকে আলিঙ্গন থেকে সরে যাবে
নিরুদ্দেশে নিরুৎসাহে,
অদ্ভুত সৃষ্টি সব, সবই আড়ালের গোত্রের মত।
বিবেকের কি ভীষণ দরকার স্বপ্ন সৃষ্টির?
দু’টো দিন রাতের মতো কাটিয়ে যদি
মৃত্যুর অবচেতন ভান ঘুম পাড়িয়ে ঈশ্বরকে খোঁজে
তাহলে আগামীর ভাবনা অনর্থক।
আর আমরা বৃথাকে প্রাপ্তির খোঁজে নিরন্তর জেগে থাকি…

মাইনে

মাসের শেষে জোটে মাইনে
এর ভেতর গেঁথে আছে বুনে ফুলের মালার মতন
প্রত্যাশা, বাসনার তীব্র ইচ্ছে, স্বপ্নের চোখ খুলে যায়
মাইনে দুঃখবিলাসে আড়ালে অশ্রু জড়িয়ে
বয়স ধরে চরিত্রের মুখ পানে চায়
জনক থেকে জননী, ভাতৃত্বের বন্ধন
সবার দূরদর্শী ভাবনায় মিশে আছে মাইনে
পকেট শূন্য হতে হতে দুঃখ মিশে মাসের দিন ক্ষণে
দায়িত্বের চোখে অশ্রু
কার ইচ্ছেপনায় গোলাপ ফুটলো?
কার স্বপ্ন জুড়ে শাপলা ভাসছে?
মাইনে অনাথের মতন,
সর্প দংশনের মতন
ভুক্তভুক্ত যেদিন অসহায় হয়ে মাটিতে লুটে পড়বে
সেদিন শূন্য মাইনে,হাত জোড়া খালি
সেদিন নিজেকে চেনা যাবে, দায়িত্ব সমুদ্রের ঢেউ ছুঁয়ে
মাসের মাইনেকে আলিঙ্গন করেছে
শত প্রত্যাশার বুকে…

মিলে থাকি সব ভুলে

হিংসে, বিদ্বেষ, প্রতারণা সব ঘুছে
স্বল্প সময়ে জীবন থাকুক উল্লাসে
মিলে না হয় অমিলে সব মেনে নেবার শখে
একসাথে চলি না ক’টা দিন উৎসবে দেখি জগৎটাকে
মৃত্যু তো ঘুরছে দুয়ারে দুয়ারে কেন হবে ছলপনা
আনন্দে থাকি মুহূর্তে সবে ঝামেলাবিহীন সংসারে
মেনে নেবার গুণ পোক্ত সেতো গুণী
বাস্তব জীবনে মোকাবিলা ভীষণ শক্ত
নরম মনে সরম ভেঙে সব কিছু ঘুছে
মানুষ’ত মোরা হবে ভুল, ক্ষমার সাথে বসবাস
তাইতো জীবন বাধভাঙ্গা হবে উল্লাস।

Share:
0 0 votes
Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

Nandik Shop