লিপিষ্টিক
চিনু কবির
সহজ কবিতার ভেতর অনেকগুলো পাখি উড়ে এসে
বসে। অপরাহ্নের আলোয় শীত বুনতে গিয়ে অস্তগামী
সূর্য বুনে ফেলে। বউয়ের বুনানো লাল সোয়েটার পড়ে
খুশি লাগছে। খুশি হলে মানুষও লাল হয়ে যায়।
অনুরাগ মেখে তরমুজের খেত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম।
তরমুজের ভেতর থেকে গোপনে বেরিয়ে আসছে অজস্র
লিপিষ্টিক ।
লিপিষ্টিকই জানে এগুলো কার জন্য রাখা।
ক্ষুধার নীচে
চিনু কবির
ভোরবেলা আমাদের মহল্লা ঘুমিয়ে থাকে। হাঁটতে
বেরিয়ে দুপাশের বাড়িগুলোর নাম দেখি- কোনটা
জান্নাত ভিলা ,কোনটা শান্তি মহল।খুব হাসি পায়।
ফেরার পথে ময়লার স্তুপে পরে থাকতে দেখি- ভাঙ্গা
টুথ ব্রাশ, প্লাস্টিকের কন্টেইনার, ইমারজেন্সি পিলের
পাতা, ইঁদুর মারা বিষ…।
অন্ধ ভিক্ষুক বসে আছে রাস্তার মোড়ে। ক্ষুধার নীচে
কয়েকটি খুচরা পয়সা।
কালো বাক্স
চিনু কবির
ঢাকা আসতে যেতে ফুড ভিলেজে নামতে হয়।
কিছু দোকানে মানুষ ঝুলে আছে।
মানুষের মতো গামছা, গামছার মতো মানুষ। ছোট বড়।
তাদের একজন আমার বাবা একাত্তরের শহীদ।
আরেকজন আমার সন্তান চব্বিশের শহীদ।
তবে শোন, আমি কোন সুরকার নই।
আমার পকেটে একটা কালো বাক্স থাকে।
তাতে কোন কেউটেসাপ নেই, সন্তান হারা মায়েদের
কান্নাগুলো বন্দী করে রেখেছি।
রাতের আঁধার , দংশনের সুরে কেউটে সাপ হয়ে আমি
নিজেই মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
শ্যামলী বাস ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কালো বাক্সটি আর বন্ধ হচ্ছেনা।