৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা
৩রা ডিসেম্বর ২০২৪
বাঙলা গবেষণালয় সংক্রান্ত বিচিত দুর্ভাবনা
মনসুর মুসা
সমাগত সুধীজন,
এক. উপক্রমণিকা:
প্রতিষ্ঠানটার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণী জনাব বশীর আল হেলাল ‘বাংলা একাডেমীর ইতিহাস’ শীর্ষক গ্রন্থে প্রদান করেছেন। আমি সেই ইতিহাস আলোচনা করব না । বাংলা একাডেমীর ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ খ্রীষ্টাব্দে। সেই স্মারকগ্রন্থে পূর্ববর্তী সকল পরিচালক, মহাপরিচালক ও সভাপতিবৃন্দের গুরুত্বপূর্ণ রচনা ও স্মৃতিকথা সংকলিত হয়েছে। সুতরাং বাংলা একাডেমীর স্বপ্নদ্রষ্টা ড: মুহম্মদ শহীদুল্লাহর প্রবর্তনায় ‘বাংলা গবেষণাগার’ প্রতিষ্ঠার কথাই বলা হয়েছিল। বাংলা একাডেমীর তারিফ করার বিষয় যেমন আছে, তেমনি আলোচনা, সমালোচনা ও নিন্দা করার বিষয়ও আছে। আমি অতীতের গবেষণার মূল্যায়ন না করে ভবিষ্যতে বাংলা একাডেমী কি ধরনের কাজ করতে পারে তার একটি সংক্ষিপ্ত রূপরেখা আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরতে চাই। সূচনাকালে ‘বাংলা’ গবেষণার কথা বলা হয়েছিল। তবে বাংলা গবেষণার কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় নির্ধারিত ছিল না। বাংলা মানে বাংলা ভাষা হতে পারে। বাংলা সাহিত্য হতে পারে, হতে পারে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য কিংবা সংস্কৃতি। ‘বাংলা গবেষণা সূত্রপাতের আনন্দ’ বাংলা একাডেমীর প্রাপ্য ।
দুই. বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা :
তবে বঙ্গদেশে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার সূত্রপাত হয়েছিল উইলিয়াম জোন্স্ (১৭৪৬- ১৭৯৪) ও তাঁর সহযোগীদের চেষ্টায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার সময় থেকে। সে প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিল এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা। আরো পরবর্তীকালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ প্রতিষ্ঠা করে গবেষণার ঔপনিবেশিক অভিজ্ঞানকে দেশীয় অভিজ্ঞানে সংস্থাপিত করা হয়।
তিন. ভাষা আন্দোলন:
বাংলা একাডেমী একসময়ে বাংলাভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় সম্পৃক্ত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছিল । সম্প্রতি দেশে একটি যুগান্তকারী আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে। যাকে সংবাদপত্রে জুলাই আগস্টের আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নামে অভিহিত হয়েছে। এই সূত্রে সংবিধানে সংস্কার, রাষ্ট্র সংস্কার, আরো বহুবিধ সংস্কারের ধারণা প্রতিনিয়ত আলোচিত হচ্ছে। যেটা এখনো আলোচনায় উপ্ত হয়নি, তা হচ্ছে, সব সংস্কারের আলোচনায় ভাষার সংশ্লিষ্টতা আছে। সংবিধান সংস্কার করতে হলে সাংবিধানিক ভাষার প্রয়োগযোগ্যতার কথা আছে। সংবিধান লেখা হয়েছিল সাধুরীতিতে, সংস্কার করে কি তাতে চলতি রীতি ব্যবহার করা হবে? আইনের ভাষার প্রশ্ন আছে, চিকিৎসার ভাষার কথা আছে। উচ্চশিক্ষায় ভাষার কথা আছে। তোষামোদের ভাষার কথা আছে, ভাষার কথা আছে। কথা আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদির গালাগালির ভাষার কথা।
চার. চেতনাগত বৈষম্যের কথা:
আমাদের রাষ্ট্র, সমাজে, দেশে নানাবিধ বৈষম্য আছে। সবচেয়ে বড় কথা মানুষের চেতনাগত বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। এই চেতনাগত বৈষম্য বাংলা একাডেমীর ইতিহাসেও আছে। বৈষম্য নেই কোথায় সেটা পাওয়াই সমস্যা। এ ধরনের বিষয় নিয়ে গবেষণা হতে পারে, ধরুন বাংলা একাডেমী নাম নিয়ে চেতনাগত ভিন্নতা। একসময় লেখা হত বাঙলা একাডেমী। তারপর ‘ঙ’ কে বর্জন করে করা হল ‘ং’ অনুস্বার। তারপর বর্জন করা হল একাডেমীর কী দীর্ঘ ইকার। এখন হল “টি হ্রস্ব ইকার। এই পরিবর্তনের ফলে একাডেমীর লাভ-ক্ষতি কি হলো তা কিন্তু বিবেচনার বাইরে রয়ে গেল । পরিবর্তন হলো স্থৈর্যের বিপরীত একটা প্রপঞ্চ। এই প্রবণতার প্রয়োগ বাংলা একাডেমীকে অজান্তে অনেক ক্ষতির কারণ ঘটিয়েছে। এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হতে পারে।
পাঁচ. একাডেমীর কথা:
বাংলা ‘একাডেমী’ অংশ নিয়েও অনেকের মাথাব্যথা ছিল। একাডেমী বাংলা নয়, বিদেশী শব্দ। প্রকৃতপক্ষে ইতালীয়ান রেনেসাঁসের চেতনায় সমৃদ্ধ ফ্লোরেনটাইন বিদ্বানমণ্ডলীর প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক ডেল্লা ক্রুসকা চেতনার প্রসারণ ঘটেছিল। ডেল্লা ক্রুসকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৫৮৩ খ্রীষ্টাব্দে। উদ্দেশ্য ছিল ইতালীয়ান ভাষার শুদ্ধতা সংরক্ষণের চেষ্টা। এই মর্মে অভিধানও প্রণীত হয়েছিল।
ছয়. একাডেমীর বইয়ের ভাস্কর্য:
বাংলা একাডেমী বই প্রকাশ করে। সেইসব বইয়ের মধ্যে যেগুলো খুব প্রচলিত, সেগুলো তাস্কর্যের শিকার হয়। কারা সেই সব তস্কর অর্থাৎ ইংরেজীতে বললে pirate, তারা কারা সে সম্বন্ধে গবেষণা হতে পারে। এতে বাংলা একাডেমীর ভেতরের লোক আর বাইরের লোক কিভাবে কিভাবে সিন্ডিকেট বানায় তাও জানার বিষয়। এতে বাংলা একাডেমীর আর্থিক ক্ষতির কারণ ঘটে বলেই বিষয়টি অনুধাবন করা প্রয়োজন। যদি ভবিষ্যতে পাইরেসী বন্ধ করে বাংলা একাডেমী লাভবান হতে পারে, আর্থিক দিক দিয়ে স্বনির্ভর হতে পারে মন্দ কি!
সাত. একাডেমীর আর্থিক নির্ভরশীলতা:
আপনারা অবগত আছেন, বাংলা একাডেমী অসহায়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অনুদানের উপর নির্ভরশীল একটি প্রতিষ্ঠান। সরকার দয়াপরবেশ হলে বাজেট বৃদ্ধি করে অনুকম্পা প্রদর্শন করে। না হলে আর্থিক কষ্ট পায়। তাই বাংলা একাডেমী নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের গবেষণা কর্মসূচীকে পদ্ধতিগতভাবে চালিয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
আট. শাখা-প্রশাখা ও গণদাবী:
বাংলা একাডেমীর অনেকগুলো শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেগুলো কি কারণে বন্ধ হয়ে গেল তা আমার জানা নেই। হয়েছিল গণ দাবীতে, কিন্তু গণদাবী মানতে গিয়ে বাংলা একাডেমীর আর্থিক ব্যবস্থাপনা লেজে-গোবরে অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। একবার একজন অর্থমন্ত্রী বাংলা একাডেমীর তৎকালীন মহাপরিচালককে ধমক দিয়ে বলেছিলেন- “ বাজেট বৃদ্ধি? যা দিয়েছি তাই খরচ করতে পারেন না। আর বেশী চাইলে যা দিয়েছি তাই বন্ধ করে দেব।” বেচারী মহাপরিচালক চুপচাপ চলে এসেছিলেন। সেই জন্য বাংলা একাডেমী স্বনির্ভর প্রয়োজন আছে।
নয়. ‘তন্ত্র’ আর ‘বাদ’:
বাংলাদেশে নানারকম ‘তন্ত্র প্রচলিত আছে। কয়েকটি তন্ত্রের নাম বলি। যেমন গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধনতন্ত্র। এই তন্ত্রগুলো সম্পূরক নয়, সাংঘর্ষিক। ফলে সংঘর্ষ কিংবা সংঘাত লেগেই থাকে। সংঘর্ষের অবকাশে একনায়ক তন্ত্র বলে আরেক তন্ত্র আবির্ভূত হয়। আইয়ুবের সামরিক শাসনকাল থেকে এরশাদের শাসনকাল পর্যন্ত এ চিত্র দেখা গেছে। তন্ত্র আরেকরূপ আছে সেটি হচ্ছে ‘বাদ’। যেমন ‘একেশ্বরবাদ’, ‘নিরীশ্বরবাদ’, ‘মার্ক্সবাদ’, ‘লেনিনবাদ’, ‘মাওবাদ’ আরো ছিল ‘মুজিববাদ’। একসময় স্লোগান শুনেছিলাম “বিশ্বে এলো নতুনবাদ, মুজিববাদ, মুজিববাদ।” এর উপর বেশ কিছু বইও লেখা হয়েছিল। আমাদের একজন রাজনীতি ভাবুককে বলা হত ‘কাপালিক’। কাপালিক শব্দটি বেশ পুরাতন, চর্যাপদে আছে ‘তু লো ডোম্বি হাউ কাপালী, তারা নাকি হাড়ের মালা পরিধান করতো। বাঙলা একাডেমী একজন মহাপরিচালক ‘নতুন চর্যাপদ’ আবিষ্কার করেছেন, ‘জাপানে গিয়ে, নেপালে গিয়ে। বাংলা একাডেমীর একজন কর্মকর্তা এদিকে মনোযোগ দিয়েছেন। সুতরাং ব্যাপক গবেষণা করে শতবর্ষ আগে আবির্ভূত চর্যা পদাবলীর অর্থানুসন্ধানের কাজ চলতে পারে। বিশ্লেষণের কাজ চলতে পারে। পথের সন্ধান দিতে গিয়েছেন একসময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান। তিনি বাংলা ভাষায় মিত্রাক্ষর ও অমিত্রাক্ষরের একাধিক বই লিখেছেন। তিনি বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের একটা উপকার করেছিলেন। সেটা হচ্ছে একাডেমীর এক মহাপরিচালক দেখলেন একাডেমীতে একটি নজরুল মঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু নজরুল মঞ্চে নজরুলের কোনো ভাস্কর্য নেই । তাহলে লোকে নজরুলকে দেখবেন কি করে? সিদ্ধান্ত হলো নজরুলের একটা ভাস্কর্য নির্মিত হবে। করতে গিয়ে দেখা গেলো কিছু লোক ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। একজন তো আলোচনা করতে গিয়ে বলেই ফেললেন, ‘এই মূর্তি আমরা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে শেষ করে ফেলবো। মহাপরিচালক ভাবলেন নজরুল ভাস্কর্য এমনভাবে তৈরী করতে হবে যাতে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া না হয়। কিন্তু ভাস্কর্য যেন নিখুঁত হয়। কিন্তু ভাস্কর্য যেন নিখুঁত হয়। সেজন্য ব্যবস্থা ও সতর্কতা অবলম্বন করা হল। পঞ্চাশজন লোককে দেখানো হবে নজরুলের প্রতিকৃতি যথার্থ হয়েছে কিনা তাঁরা মতামত দেবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান এক সন্ধ্যার আলোতে অবলোকন করে রায় দিলেন। ‘ঠিক আছে’। খিলখিল কাজী নজরুলের প্রপৌত্রী দেখেই চিৎকার করে উঠলেন ‘দাদু’। নজরুল ইসলামের স্থাপিত ভাস্কর্যটি কোত্থেকে তৈরী করা। বাংলাদেশে এখনও মূর্তিপূজা আর ভাস্কর্য স্থাপনের তাৎপর্য বুঝতে চায় না অনেকেই।
দশ. বাংলা একাডেমীর দায়িত্ব ও দায়:
বাংলা একাডেমীর প্রধান দায়িত্ব কি এটা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা না থাকার কারণে অনেক ব্যক্তি সুধীজন কিংবা বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান মনে করে রাষ্ট্রের বাংলা সম্পর্কিত সব কাজের হর্তা-কর্তা-বিধাতা হলো বাংলা একাডেমী। এ রকম ধারণার ফলে যত ধরনের ভুলত্রুটি ভাষা ব্যবহারে হোক না কেন, সেগুলো এসে পড়ে একাডেমীর উপর। শুনেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭২ সালের আইন অনুবাদের জন্য বাংলা একাডেমীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ আছে,আইন বিভাগ আছে, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগও আছে। অথচ বাংলা একাডেমীতে আইনগত কিংবা দ্বিভাষিক যোগ্যতাসম্পন্ন বেশী লোক নেই। তাহলে কিভাবে একাডেমী একাজ সম্পন্ন করবে? শুনেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক রহমত আলী এ ব্যাপারে কিছু কাজ করেছিলেন। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে সে কাজ সমাপ্ত হয়নি।
এগারো. ওয়েবসাইটে বাংলা একাডেমী:
বাংলা একাডেমীর একটি ওয়েবসাইট আছে। সে ওয়েবসাইটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। ভালো কাজ। কালান্তরের সঙ্গে তথ্য প্রবাহের আধুনিকীকরণ হচ্ছে। তবে কিছু অসঙ্গতি আছে, কিছু অপ্রয়োজনীয় বিলোপন আছে। সেগুলোরও সামঞ্জস্যসাধন প্রয়োজন । সর্বত্র হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গা সমীচিন নয়। সভাপতি মহোদয় আমার একান্ত আপনজন, বন্ধু ও পরম হিতৈষী আর মহাপরিচালক আমার স্নেহভাজন ও উত্তরসূরী। তাঁদের সঙ্গে সেগুলো আলোচনা করবো। আপনারা নিজ নিজ গুণে সেগুলো দেখে নিবেন। বাংলা একাডেমীর কর্মকর্তা কর্মচারীদের দক্ষতা আছে, বিবেচনা আছে, তাঁরা আপনাদের সহযোগিতা পেলে ভালো করতে পারবে। আপনারা সহযোগিতা করবেন।
বারো. দাবী আর না-দাবী:
দাবী আছে। বার্ষিক সাধারণ সভায় সারা দেশের সদস্যবৃন্দ আসেন। তারা অনেক দাবী করেন। আমি বাংলা একাডেমীর সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভা ২০১৯ কার্যবিবরণী দেখছিলাম। তাতে এমন সব অত্যাশ্চর্য দাবী আছে যা করতে গেলে বাংলা একাডেমীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ পিছিয়ে যাবে। দাবীগুলোর কয়েকটিকে না-দাবী করা উচিত। একটা মাত্র বলি, মৃত্যুর পর সদস্যপদ প্রদানের একটি দাবী আছে। দাবীটি ভালো কিন্তু যুক্তিসঙ্গত নয় ।
অনেক সদস্য আতাউল গণি ওসমানীর কথা বলেছেন, তাজউদ্দিন আহমদের কথা বলেছেন। এগুলো ভালো দাবী। আমি একজন চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বাংলা একাডেমীর বার্ষিক সাধারণ সভায় কতক্ষণ কথা বলা সঙ্গত। তিনি বলেছিলেন বেশী কথা বলা অনেকেই পছন্দ করেন না। কম বলাই ভালো। চিকিৎসকের কথা শিরোধার্য।
আমি সকলের মঙ্গল কামনা করে আমার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করলাম। তবে শেষ কথা হলো বাংলাদেশ এবং সমগ্র পৃথিবী বৈশ্বিক উষ্ণতার কবলে পড়েছে। শূন্য কার্বন তত্ত্ব যদি আপনারা অনুসরণ করেন, তবে মানবজাতির মঙ্গল হবে।
সহায়ক উপকরণ পঞ্জী:
১. বশীর আল হেলাল (১৯৮৬), বাংলা একাডেমীর ইতিহাস, ঢাকা: বাংলা একাডেমী।
২. সম্পাদনা পরিষদ (১৯৯৬), বাংলা একাডেমী, স্মারকগ্রন্থ, চল্লিশ বর্ষপূর্তি, ঢাকা: বাংলা একাডেমী।
৩. হাবিবুল্লাহ সিরাজী ( ২০১৯), বাংলা একাডেমি সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভা ২০১৯- কার্যবিবরণী, ঢাকা: বাংলা একাডেমি।
সুব্রত বড়ুয়া (২০২২), বাংলা একাডেমির সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত ও প্রত্যাশা, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তব্য, ঢাকা : বাংলা একাডেমী ।
৫. আবুল মোমেন (২০২১), একুশে ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ও বেদনার কথা, বক্তৃতা (২০২১), ঢাকা : বাংলা একাডেমি ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
৬. যতীন সরকার (২০১৪), বাংলাদেশের সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা ও নিকট অতীতের আলোয়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা (২০১৪), ঢাকা: বাংলা একাডেমি ।
৭. V.B Gonesan (2015), Puthis and the savants: U. Ve Swaminatha lyer (Tamil), Abul Karim Sahitya Visharad ( Bengali)
৮. হীরক জয়ন্তী বক্তৃতা ২০১৫, ঢাকা: বাংলা একাডেমি ।
অধ্যাপক মনসুর মুসা
অধ্যাপক মনসুর মুসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন এবং তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।
অধ্যাপক মুসা ভাষাবিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক ও গবেষক হিসেবেও দেশে-বিদেশে সুপরিচিত। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : প্রবন্ধ-গবেষণা : পূর্ব বাঙলার উপন্যাস (১৯৭৪); ভাষা পরিকল্পনা ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৮৪) ; ভাষাচিন্তা : প্রসঙ্গ ও পরিধি (১৯৯১) ; ভাষা পরিকল্পনার সমাজভাষাতত্ত্ব (১৯৮৫) ; বাংলা পরিভাষা : ইতিহাস ও সমস্যা (১৯৯৬) ; বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা (১৯৯৬), Language Planning in Srilanka : পাঠকের পাঠশালা (২০০০)। জীবনী : মুহম্মদ আবদুল হাই : মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ : মুহম্মদ এনামুল হক। ভ্রমণ-কাহিনী : জাপানের পথে (১৯৯৬) ; দক্ষিণ কোরিয়ার দিনগুলো (২০০৩)। সম্পাদনা : বাংলা ভাষা (১৯৭৩) ; বাঙলাদেশ (১৯৭৪); মুহম্মদ এনামুল হক রচনাবলী (১ম-৫ম খণ্ড)। সংশোধক : জাপানী-বাংলা প্রয়োগ অভিধান (১৯৮৯)। যৌথ সম্পাদনা : স্তরভিত্তিক শব্দভাণ্ডার ; জাতীয় গ্রন্থনীতি (১৯৯২); শিশু বিশ্বকোষ । তিনি গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পুরস্কার পেয়েছেন।