“মৃত্যুরঙিন”
নাটক: জাহিদ সোহাগ
নাটক: জাহিদ সোহাগ
(একটি পুরাতন সাইকেলে লম্বা কাঠের সঙ্গে কাফনে মোড়া একটি মৃতদেহ। একজন বৃদ্ধ সাইকেলটি ঠেলছে। খালি গা, ঘামে ভেজা। মঞ্চে সাইকেলটি স্ট্যান্ড করে রেখে সংলগ্ন হয়ে দাঁড়ায়। সে বাতাসে নানা কথাবার্তা শোনে, আর তারই জবাব দেয়। তবে দর্শক সেইসব প্রশ্ন শুনতে পাবে না, কেবল উত্তর শুনে অনুমান করে নিতে হবে প্রশ্ন কী ছিল।
চরিত্র : নানান রূপে একজন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা প্রতিটি চরিত্রের জন্য আলাদা আলাদাও হতে পারে।)
চরিত্র : নানান রূপে একজন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা প্রতিটি চরিত্রের জন্য আলাদা আলাদাও হতে পারে।)
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: যাত্রা দ্যাখতে ম্যালা করছি। রহিম রূপবানের পালা। যাইবানি? (বৃদ্ধর মুখ গম্ভীর)
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: আরে লও লও। তোমার চাচিরে গোর দিয়া, না হয় চিতাখোলার আগুনে ঠ্যালা দিয়া…হ্যারপর যামানে। কী কই চললা?
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: আরে গোর দেওনের জাগা কই পামু? ম্যালা করছিলাম গাঙ্গে, ভাসাই দিমু…যদি চিতাখোলা জ্বলে তাও তো ধর্মকম্মের মইধ্যে রইলো।
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: গাঙ কোতায় জানি না। ম্যালা দূর অইবো? নাকি গাঙ নাই, চিতা নাই খালি তামাসা?
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: কে কোন গেরামের লোক–তা জিগায় কেডা, আর কেইবা তা কইতে পারবো! এই যে আমারে দেখতাছো, তুমি কি মনে করো আমি বুইড়া চাচা? না না, আমি এই লাশের জান, সোয়ামীর ছৈল ধইরা বাইরাছি নিজের সৎকার করতে। এত লাশ পোড়াইবো ক্যাডা, গোড়ই বা দিবো ক্যাডা? নিজেরডা নিজের করনই ভালো।
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: হ। আল্লার বিচার আল্লায় করবো। দুনিয়ার বিচার দুনিয়াওয়ালোগো করোন নাগবো না? (হাসে) মাইনসের বিচার আবার কী? বইপত্রের ভিতর মানুষের কত কত আইন ল্যাখা আছে, (চিৎকার করে) কী জব্বার মুহুরি, নাই? নাই আইন? আইন দিয়া কি হইছে কইতে পারো?
(থেমে) আমরা অতসব জানি না। প্যাচটা আর চ্যাটটার শান্তি চাই। চাইছিলাম। পাইলাম কই? এখন কও গাঙ কোনদিকে? চিতা কোনদিকে, গোরস্থান কোনদিকে?
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: জ্বর, সর্দি এইয়ারে কি আমল করছি আমরা? পোলাপানরে মধু দিয়া গরম পানি খাওয়াছি। নিজেরা শইষ্যার ত্যাল নাকের ফুটায় লাগাইয়া দিছি টান। রসুন ভর্তা দিয়া, কালাজিরা ভর্তা দিয়া গরম ভাত মাইখ্যা খাইছি। (থেমে, কিছুটা হতাশ হয়ে) একে একে সব গ্যাছে, পোলাপান, নাতিনাতকুর, আত্মীয়স্বজন, পড়শীরা। কারা যে বাইচ্যা রইছে বুঝতে পারি না। (উপরের দিকে তাকিয়ে) তোমার চাচির রাইতে শ্বাস উঠলো। কইলো আমারে বাঁচাও চাঁন ফকিরের বাপ। আমারে বাঁচাও।
চাঁন ফকির কি বাঁইচা আছে? আছে কও দি। চাঁন ফকিরের বাপ কি বাইচা আছে কও দি? কোনো সুম্মুন্ধি বাঁইচা নাই। হাসপাতালে গেলে কয় সদরে যাও। এইহানে মরার লাইগা বিষও পাইবা না। বাবারে সদর অন্দর কি আমরা চিনি? হেই রাইতের বেলা সদর হাসপাতালে যাই কেমনে!
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: (দৃঢ় হয়ে) যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ। সদর অন্দর যেখানেই হোক যাইতে হইবোই। যামুই যামু। (লগি বৈঠা হাতে নেওয়ার ভঙ্গি করে চিৎকার করে) এ এ এ এ মুনছুইরা, লঅ অ অ তোর চাচিরে লইয়া সদরে যাই। শ্বাসের জ্বালায় আসমান জমিনে নাড়াই লাগছে রে, মুনছুইরাআ আ…
(চিৎকার করে) মোর নাও কই? নাও কই? জলদি খালের তলপ্যাট থিকা উডা মাগিরে। বুক পাছা ফাইরা ফুইরা যায় যাউক, যামুই যামু বাইয়া যামু।
এ এ এ এ মুনছুইরা… মুনছুইরার রা নাই।
এইবার না ত্যাজাবার নাও ডুবাইছি, মনে নাই, মনে নাই। তয় নাও আছিলো, আছিলো নাও। গেলো কই, কই? আছমান থিকা পরী আইসা ছো দিলো? আমার পরদাদা ছলিমুদ্দি হালাদারের আশি হাত নাও কই গেলো? কোন শাউয়ার মইধ্যে হাইন্দা রইছে, বাইরা।
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: (বৃদ্ধ শান্ত) নাও নাই, ভ্যান নাই। গাঙ নাই। গাঙে পানি থাকলে ক্যালাগাছ কাইট্টা ভেউরা বানাইতাম। এইদিকে শ্বাস উঠছে। বুক ফাইট্টা মরে। বুড়িরে সাইকেলে কাডের লগে বাইন্ধা, বাজান বাইরাইছি সদর যামু, সদর যামু না চিতাখোলা যামু, না গোরস্থানে যামু, দিশা করতে পারি না। পারি না।
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: যাত্রাই তো, যাত্রাই দ্যাখতাছি তামাম দুনিয়ায়। শ্বাসের নল দিবো, নল নাই। হাসপাতালে জাগা নাই। মানুষ মরে আর মাডির তলে হান্দে, মানুষ মরে আর চিতার আগুনে পোড়ে। ২ ট্যাকার বিষ ২০০ ট্যাকায় কিন্যা খাইবা? চোরের চ্যাট তামা তামা কইরা দিছে তামাম দুনিয়। খালি খোমা ভরা কথা। চোৎমারানিগো খালি কথা আর কথা। ওগো কথার উপরে আমি মুতি। মুতি।
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: কোনো কথা চাপা থাকে না। কোনো লাশ গোপন থাকে না। দ্যাখো না পায়খানার টাঙ্কির ভিতর থেইকা কঙ্কাল বাইরায়। কোনো কিছু গুম কইরা রাখন যায় না। দুনিয়াডা উদাম পাছার ল্যাহান। কোনো গোপন নাই। তুমি আমারডা দ্যাহো, আমি তোমারডা দেহি। কিন্তু তুমি মনে করো তোমারডা বুঝি কেউ দ্যাহে না!
(বুড়া সাইকেলটাকে মঞ্চের মাঝেখানে দাঁড় করায়। নিজে সাইকেল ছেড়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। লাশের কাছে নাক নিয়ে গন্ধ শোঁকে, আরেকবার নিজের গায়ের গন্ধ শোঁকে।)
(এবার বৃদ্ধটি যুবকের মতো হয়ে উঠবে)
: এক্সকিউজ মি, হ্যালো, হ্যালো, ক্যান আই হেল্প ইউ?
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: ও আমি? আমি স্বেচ্ছাসেবী। বলতে পারেন আমি লাশের সৎকার করি। মানে করতাম। এখন ভীড় বেশি, তাই যদি একটু ইনফরমেশন দিয়ে সাহায্য করতে পারি। না, না, আমি এনজিও বা সরকারি লোক নই। বা লোকই নই। বেঁচে থাকলেও মৃত, বা মৃত হলেও জীবিত। সেসব ডাজেন্ট ম্যাটার। আমি বলতে চাচ্ছি, হ্যালো, হ্যালো [ডেডবডির দিকে ঝুকে] ক্যান আই হেল্প ইউ? (বিরক্ত হয়ে) ফাকিং ম্যান (বিরতি) অর ওম্যান (বিরতি) হিজড়া (বিরতি) চিলড্রেন। যা খুশি হোক, হোক, শিট!
(হাওয়া থেকে প্রশ্ন আসে)
: (পকেট থেকে এনড্রোয়েট ফোন বের করে) একটু নিউজ টিউজ পড়ি আরকি! [দর্শকদের দিকে তাকিয়ে] কি আপনারাও শুনতে চান? আচ্ছা বলছি– [দর্শকদের দিকে তাকিয়ে] বিস্তারিত বলতে পারবো না। আমার যাতে যাতে ইন্টারেস্ট আছে তারই শিরোনাম পড়বো।
(সংবাদ পাঠকের ভঙ্গিতে)
–খেজুর গুড়ের পাটালি খেলেন রাষ্ট্রপতি। (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে) বিস্তারিত বলবো? না ইন্ট্রো পড়ি– খাদ্য সংস্কৃতির চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গতকাল সকালে খেজুর গুড়ের পাটালি খেলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ঘ্রাণ বিনিময় করেন এবং (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে) থাক, ওই আর কি!
: (যুবকটি প্রধানমন্ত্রী হয়ে যায়)
না তো, আমাকে তো বলা হয়েছে কাঁঠালের এচোড়। মাংস দিয়ে রান্না। তাহলে কি রাষ্ট্রপতি পাটালি খেলেন জাতিকে না জানিয়ে? ভেরি স্যাড। [চিৎকার করে ডাকেন] সোবাহান, সোবাহান, প্রেসকে জানাও। বিকালে ভার্চুয়ালি কনফারেন্স করবো।
(একটি টেলিভিশনের সেট দেখা যাবে। সেখানে একজন উপস্থাপিকা দুজন সাংবাদিক ও একজন বিশেষজ্ঞ নিয়ে বসেছেন এই সংবাদের পর্যালোচনা করতে।)
উপস্থাপিকা : শুরুতে ‘টাকা ঢালুন চিকিৎসা নিন হাসপাতাল’-এর সৌজন্যে আমি জানতে চাইবো, এই যে খাদ্য সংস্কৃতির মহান ঐহিত্য, শীতের সকালে পাটালি গুড় দিয়ে মুড়ি খাওয়াÑযার ঘ্রাণে কোনো ষড়যন্ত্রতত্ত্ব বা উন্নয়ননীতি আছে কিনা?
বিশেষজ্ঞ : ধন্যবাদ ১২ টার জার্নালে। সুধী দর্শক শুরুতে আমাদের জানতে হবে সংস্কৃতি কী এবং খাদ্য সংস্কৃতি কী? এ বিষয়ে কবর থেকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ জনাব ডক্টর…অবশ্য উনি ডক্টরেট নন, কিন্তু ওনার নামের সঙ্গে কী দারুণ ডক্টর মানিয়ে গেছে তাই না?
উপস্থাপিকা : আমরা মনে হয় গুড়ের ঘ্রাণের মধ্যে মানুষ মরছে এই সংবাদ জনগণকে দিতে পারি না। আফটারঅল মানুষ মরা, মানে বিনা চিকিৎসায় মরা এই ভূমিস্বর্গের রীতি। আর পাটালি গুড়ের ঘ্রাণ হচ্ছে সংস্কৃতি। মিস্টার ডক্টর আমি যদি ভুল বুঝে না থাকি, অ্যাম আই রাইট?
ফোকলোরবিদ এবং সাংবাদিক : ইয়েস ইয়েস।
(আবার যুবকটিকে দেখা যাবে।)
: (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে) সরি, আপনারা রাতে বাসায় বসে পুনপ্রচার দেখে নেবেন। আমার ফোনে আবার বেশি ডেটা নেই। এক্ষুণি আমার একটি লাইভ করতে হবে। (আশেপাশে তাকায়) একটা ট্রাইপট হলে ভালো হত। সে যাকগে।
(যুবকটি লাশের উপড়ে ফোন রেখে লাইভ শুরু করে।)
: হাই ফ্রেন্ডস, এই মুহূর্তে আমি একটি লাশের সঙ্গে আই মিন একটি ডেডবডির সঙ্গে আছি। সম্ভবত ডেডবডিটি কোনো নারীর হবে, বা পুরুষও হতে পারে (ঘৃণার ভঙ্গিতে) না, না আমি খুলে দেখতে পারবো না। তারচেয়ে আমি ডেডবডির সৎকার শুরু করি। এজন্য আমার লোকজন দরকার হলেও আমি একাই যথেষ্ট। নেটিজনদের কাছে আমি কিছু প্রশ্ন রাখি–
: লাশটি পুড়িয়ে দেবো?
: মাটি চাপা দেবো?
: নাকি খেয়ে ফেলবো?
(হঠাৎ মঞ্চ অন্ধকার। শিয়ালে মুহুর্মহু ডাক শোনা যাবে)
(মঞ্চে আলো এলে দেখা যাবে সাইকেলে লাশটি নেই, কাঠও না। ভদ্রলোকের মতো একজন বসে ঘণ্টা বাজালেন একবার দুইবার)
: (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে) আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। রাতের বেলা তো বেকার থাকি তাই দুপয়সা রোজগারের আশায় পথে বের হই। (তিনি তার ঝোলা থেকে সাদা কাপড় বের করেন) এইমাত্র এটা সংগ্রহ করলাম। (শুকে) না ধুলেও চলবে, কাল এটা আমার দফতরে জমা দিয়ে বলবো, এটার দাম (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে) বলুন কত বললে উপযুক্ত হয়, মিডিয়া তথা সোশাল মিডিয়া হৈ চৈ করবে না।
(দর্শকদের ভেতর থেকে দাম উঠতে থাকবে)
: একশ।
: দুইশ।
: পাঁচশো।
: একটি নতুন কাফনের কাপড়ের দাম ১০০০ টাকা।
: তাহলে এটা কমছে কম ৮০০ টাকা হবে।
: ধুর্ ইউজড কাফনের কাপড় কেউ কেনে নাকি?
: জানবে কে? বা জানাবে কে?
(একজন দর্শক দাঁড়িয়ে)
: যদি আপনি বলেন যে আপনার মালি ভালো গাঁদা ফুল ফোঁটায় তাহলে আমি প্রকৃত দাম বলতে পারি, বলুন মাননীয় মন্ত্রী?
: কাফনের কাপড় বেচা স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না। সে চাইলেই কি বেচতে পারবে?
: অসম্ভবকে সম্ভব করা দরকারি সরকার আমরা।
(স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘণ্টা বাজিয়ে বাজিয়ে মঞ্চে সাইকেল চালাতে থাকবেন। তার সামনে সেই বৃদ্ধ এসে দাঁড়ায়।)
: দ্যান আমার সাইকেল দ্যান। আপনে কেডা?
: আমি কেডা মানে? আমি কে? [দর্শকদের দিকে তাকিয়ে]
: কেডা আপনে? আমার লাশ কই? আমার সাইকেল আপনের কাছে ক্যান?
: অসম্ভবকে সম্ভব করা দেশের নাগরিক?
: (বৃদ্ধ আশেপাশে তাকায়) না কাতারের নাগরিক। দিনার দিয়া খাজুর কিন্যা খাই। আপনের কোনো সমস্যা?
: খেজুর তো আমার কম্পানিই আমদানি করে। বাহ্ সরাসরি আমার ভোক্তা পাওয়া গেল। কিন্তু…
: কিন্তু কী?
: আমার একটু চামড়া দরকার ছিল। আমার ছেলে ম্যারিকা থাকে, ও বললো, কি একটা বানাবে একটু লেদারের শর্ট পড়েছে…
: আমি কি মুচি নাকি?
: না, তোমার চামড়া হলেই চলবে।
: আমার চামড়া নাই।
: (স্বাস্থ্যমন্ত্রী ধমক দেন) নাই মানে কী? চামড়ার জন্য জন প্রতি ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলাম, চামড়া গজায়নি এখনো?
: না গজায়নি।
: আই সি। তাহলে লোম দাও। সামনে যখন পড়েছে, দাও কিছু লোম। ব্যা ব্যা ব্ল্যাক শীপ হ্যাভ ইউ অ্যানি উল…
: লোমও নাই।
: তাহলে ভোট দাও।
: এই রাইতের বেলা?
: ভোটের আবার রাত দিন আছে নাকি? গণতান্ত্রিক অধিকার তুমি যেকোনো সময় পালন করতে পারো।
: কোথায় সিল দিমু?
: তোমার কষ্ট করতে হবে না, আমরা আগেই তা নিয়ে নিয়েছি। আমাদেরই তো দিতে নাকি? আমাদের মার্কা কি জানো না?
: জানি।
: কী?
: জানি না।
: বললে যে জানি?
: মনে করছিলাম জানি। এখন দেহি জানি না।
: তোমার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সন্দেহ আছে।
: জ্বি স্যার সন্দেহ আছে।
: কিসের সন্দেহ?
: এই ধরেন চুরি-চামারির।
: (স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেগে গিয়ে) পুলিশ পুলিশ। (চারপাশে পুলিশের বাঁশি বাজতে থাকবে)
: আমার বউর লাশ কই? চুরি-চামারি না হইলে গেলো কই? আমার লাশ কই?
: দ্যাখো পরিস্থিতি এমন যে, গণকবর বলো, গণদাহ বলো–এসব তো করতে হচ্ছে। (সম্বিত ফিরে) আরে লাশের কাছে আবার কী কৈফিয়ত দেবো? জীবিত মানুষের কাছেই তো দেই না। ভাগ ভাগ। ভাগ শালা।
(স্বগত)
ভালোই হইলো, লাশখানা চোরের হাতে গেছে। (ভেবে) আচ্ছা চোরে লাশ দিয়া কী করে? আচ্ছা যা করে করুকগা। আমার আপদ গেছে। আমার হাড্ডি দিয়া বানাইছিলাম সাইকেল। সেইটা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর গোয়ার তলে। তাইলে আমি অ্যাখন কই যাই?
: কী চুপ কেন? ও ঠিক আছে। তোমাদের চুপ করেই তো রেখেছি আমরা।
(এই নাটকের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক, এমনকি একটি শব্দও নেই, কেবল কয়েকটি সাদা পৃষ্ঠা ছাড়া।)
Share:
Subscribe
Login
0 Comments
Oldest