মহাজনসমূদ্রে এক সূদৃঢ় বজ্রকন্ঠ…
ভূমিতে তুলেছিলো অগ্নির উত্তাল ঢেউ!
মহাশক্তি সঞ্চয় করেছিলো জনতার
আবেগের ঘূর্নিঝড়!
মহাপ্রলয় ভাসিয়ে দিয়েছিলো
মহাপাতকের স্বপ্ন বিলাস!
দিগ্বিদিক শুন্য পরাশ্রিতের দল,
গভীর অন্ধকারে মেতেছিলো
পৈচাশিক মারন যজ্ঞে।
পূর্বের লাল সূর্য ঘোষণা দিয়েছিলো
পশ্চিমের নিদারুণ পরিণতির!
জীবনকে সঁপে দিয়ে মৃত্যুর কাছে,
নিরস্ত্র দেশপ্রেমীরা কিনেছিলো
টগবগে রক্তধারায় তৈরী
শত্রু দমনের মারণাস্ত্র,
অবুঝ আবেগের কারখানা হতে।
দ্রোহের আগুনে পুড়েছিলো পক্ষের শক্তি!
বিপক্ষ পুড়েছিলো প্রতিহিংসায়!
ঘরবাড়ি পুড়েছিলো,
খাদ্যগুদাম পুড়েছিলো,
অফিস পাড়া পুড়েছিলো
পুড়েছিলো ফসলের ক্ষেত।
পুড়েছিলো জীবন্ত দেহ
স্বাধীনতার অনন্ত অভিলাষে!
পুড়েছিলো সন্তানের জন্য মায়ের হৃদয়!
স্বামীর জন্য পুড়েছিলো স্ত্রীর ভালবাসা!
সিঁথির সিঁদুর আর নাকফুল পুড়েছিলো
স্বামীর নিশ্চিত মরণ সংবাদে বা অন্তরীনে!
রঙিন কাপড় পুড়েছিলো সাদা আগুনে!
পাতকের লোভী আর নগ্ন আঁচড়ে
পুড়েছিলো কতশত ঘর বাঁধার স্বপ্ন।
প্রেম পুড়েছিলো প্রেমিকের বিদায় লগ্নে বা নিখোঁজ সংবাদে।
সামগ্রিক বিপর্যয়ে পুড়েছিলো মানবিকতা!
অনুভুতি পুড়েছিলো পাঁজরের আহাকারে!
শুধু পোড়েনি হায়েনাদের নগ্ন উল্লাস!
বরং বেড়েছে নব্য হায়েনাদের জন্ম বিলাসে!
ওদের ভোগ- কাম – মোহের ঈন্দ্রিয় পোড়েনি বরং বেড়েছে অন্তর্বাসের স্পৃহা।
যতটা পুড়িয়ে নিঃস্ব হায়েনারা ঠিক ততটাই পুড়ে জলন্ত আগ্নেয়গিরি
বীর বাঙালী!
যে জাতি ভাষার জন্য পুড়ে অন্তঃপুরে,
বুক উঁচিয়ে দাঁড়ায় গুলির অপেক্ষায়।
যে জাতির অন্তর,
স্বাধীন ভূখন্ডের জন্য পুড়ে নিরন্তর,
তাকে পুড়ায় কার সাধ্যি?
যাদের চোখ, মুখ, বুক, মস্তিস্ক আর
কর্ম দীক্ষিত হয় দেশপ্রেমের অগ্নিমন্ত্রে –
তাদের হাতেই মুঠোবন্দী থাকে
আগুনের প্রজ্বলিত শিখা!
তাকে পুড়ায় কোন অন্ধ শিকারীর দল?
নয় মাস সময় আর স্বপ্ন পুড়েছিলো
দুঃসময়ের অগ্নিগহ্বরে!
অতঃপর…. প্রেমের আগুনে পুড়েছে
লোভের মহাশক্তি।
সেই হোমাগ্নির কুণ্ড হতে জন্মেছিলো
ইতিহাসের অগ্নিগর্ভা সর্বজয়া মা…..
যার গর্ভজাত সন্তান,
তারুণ্যের সবুজ আর বীরের রক্তে
রঞ্জিত পতাকা, স্বাধীন ভুখন্ড
একটি দেশ, প্রিয় বাংলাদেশ।