নীরা গলায় ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেই পড়েছিল।
সে ব্যাপারটা ঘটতে দিতেও চেয়েছিল কোনো থামানোর উদ্যোগ না নিয়েই; যার
যার জীবন সে যদি সামলাতে না পারে তার চলে যাওয়াই ভালো।
ডেলিভারির দিন এগিয়ে আসছে আর নীরা খ্যাপাটে হয়ে জগতের সবকিছুর জন্য তাকে দায়ি করছে। হিতাহিত জ্ঞানও প্রায় হারিয়ে ফেলে মাঝেমাঝে। এই বাড়িটার আশেপাশের বাড়িগুলো তিন-চার তলা হওয়ায় সেসব চিৎকার আকাশেই ঝুলে থেকে মেঘের ভেতর কুণ্ডুলি পাকিয়ে শীতের সাপের মতো বেঁচে থাকে।
গাইনি ডাক্তার ফারহানা ইলিয়াস, মাও শিশু হাসপাতালের, তাকে পুরো ব্যাপারটা বলতে হয়েছে এমনকি নিজের শার্ট খুলে নিজের স্তন বের করে দিয়েছি।
আপনি কি এখন পুরুষের প্রতি…?
আমার মনে হয় আমি আগেও, বা শৈশবের কথা বললে…
ছেলেবেলায় এমন হতেই পারে, তা দিয়ে বিচার করা যায় না। আপনি চাইলে ডাক্তার দেখাতে পারেন, হয়ত কোনো সার্জারি লাগতেও পারে।
আমি তা মনে করি না, বা এখন মনে করছি না যে দরকার আছে।
নীরার মানসিক প্রশান্তির জন্য, তাকে আস্বস্ত করার জন্য তারা, ডাক্তারও তাই চেয়েছিল, বিয়ের নাটক করে। বিয়ের আসরে বসে কিছু টাকা খরচ ছাড়া কিছু হয়নি, নীরা তার মানসিক অবস্থার সঙ্গে লড়াই করে করে শেষমেষ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়ে।
ফ্যান নীরাকে মরার সহজ পথে পালাতে সুবিধা করতে দেয়নি, অনেক পুরনো ফ্যান, সেটা এমনিতেই খুলে পড়তো, ফাঁস লাগানোর উছিলায় একটু আগে হয়েছে বা ঘুমন্ত অবস্থায় খসে পড়েনি এই ভালো। বরং তার আত্মহত্যার প্রচেষ্টা তাকে বাড়তি খরচের দিকে নিয়ে গেছে। সারাদিন একজন বুয়া তার সেবাযত্স করার ছুতায় তাকে দেখে রাখে।