এই কবিতাটি আপনাকে দেব
আমি এক নারীকে বললাম- আপনাকে চমকে দিতে পারি
আরো বললাম-যা আপনাকে দেয়নি কেউ কোনোদিন
তিনি তাকালেন বিস্ময়ে দু’চোখে আমার
বললেন- কী আছে আপনার-রাজরাণির মতো জীবন আমার
অপূর্ণতার কোনো শব্দ নেই
আমি তার দিকে তাকালাম-তার দু’চোখে রাতের তারার মতো
জ্বলছে অসংখ্য প্রশ্ন- লোকটি কী বলে
বললাম তাকে- দামি গাড়ি রাজকীয় ফ্ল্যাট আভিজাত্য
শরীরভর্তি হীরে জহরতের সুখ-এসবের কিছুই নয়
আমি যা দেব তা আপনার নেই-এবং সেটি সবচেয়ে দামি
তিনি হাসলেন- সে হাসিতে কোনো প্রাণের স্পর্শ নেই
শুকনো নদী যেভাবে ওড়ে বালুঝড়ে-তার হাসি মনে হলো
দূর কোন নগরে লুকোচ্ছে পরাণের গহিন বেদনায়
আমি বললাম নেবেন-
নারীটি এবার শ্বান্ত নদীর মতো আমার দিকে তাকায়
বললেন-বলুন তো কী আছে আপনার? যা আমার নেই
আমি তো সুখি নদীর মতো বহমান
তিনি আরও বললেন-বিকেলের সোনাভরা রোদে প্রতিদিন
আমি যখন ময়ূরীর মতো সৌন্দর্য ছড়িয়ে দাঁড়াই
আমার একান্ত পুরুষ রাজপুত্রের মতো মুগ্ধতায় আমাকে
সমুদ্রস্নানে ডুবিয়ে সুখের উৎসবের গল্প রামধনুতে মাখে
তিনি এবার তীর্যক সৌন্দর্যের তীর ছুড়ে বললেন-
আপনি আমাকে যা দিতে চান- না জানলেও আমি
বলে দিতে পারি আমার দেবার মতো আপনার কিছুই নেই
আমি বললাম তাকে- হয়তো তাই- তবুও বলি
আপনাকে দেব একটি সাধারণ কবিতা আমার
বহুরাত জেগে যে কবিতার শব্দে ছন্দে গেঁথেছি
আপনার রূপশ্রী নদীর সব ঢেউ স্রোত সংগীত গহিনের আলো
আপনি নিজেই এখন একটি কবিতা আমার
কবিতাটি দিতে চাই আপনাকে
নারীটি এবার বিস্ময়ে আনন্দে মেঘভরা বৃষ্টির মতো দুহাত বাড়িয়ে
দাঁড়ায় আমার কাছে- বললেন তিনি-
এ নগর ছেড়ে চলে যাবেন আপনি
এ নগরের বাতাসে যেন উচ্চারিত না হয়
আপনার কবিতার কোনো শব্দ ঘ্রাণ
আমার নিশ্বাসে আমি এসব একদমই নিতে চাই না
আমি বললাম-যাব বলেই তো শেষ বিকেলে আমার শেষ আসা
এই কবিতাটি আপনাকে দেব বলো পুরো জীবনই গেঁথেছি কবিতায়