বন্ধু আয় পাশে বয়
আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে থাক
চোখে চোখ রাখ।
যাক— আর সব দূরে যাক।
আমরা দুজন…
একটি মাত্র রঙিন ছাতায় তুমুল বর্ষায়
হেঁটেছি হাত ধরে শীতের গাঢ় সাদা কুয়াশায়
সমুদ্রসৈকতে বালুবিছানায় কাছাকাছি
সাগরের ঢেউয়ে সে কী তুমুল মাখামাখি, অথবা
সূর্যাস্তের পাহাড়ে গা-ছমছম তাড়াহুড়া।
বল, আমার কে আছে রে অমন— তুই ছাড়া?
পথে পথে দুজনার কত যে যৌথভ্রমণ!
ভ্রমণে ভ্রমণে গড়া আমাদের আপন ভুবন…
বিমানভ্রমণে গলা অব্দি কম্বলে ঢেকে পাশাপাশি;
ফিসফিস কথা কওয়া, খুনসুটি, হাসাহাসি। ভালোবাসাবাসি।
বাসজার্নিতে কাঁধেতে মাথা রাখি
এভাবে ঘুমাই অথবা জেগে থাকি
আমি অথবা তুই, তুই অথবা আমি।
স্টিমারের বারান্দায় রেলিং ধরে ঝুঁকে দেখা—
নদীর স্বচ্ছ জল
শ্যাওলা ভেসে যাওয়া
মাছধরা নৌকো, চাঁদের ছায়া।
দূরতম রেলপথে একচাদরে দুজন
যেমন এক কাঁথায় আধোশুয়ে দেখি টেলিভিশন।
আর, যখন রিক্সায়
অলিগলি রাস্তায়
আমার হাতের মুঠোয় তোর হাত তখন।
হঠাৎ কখনো অলস জীবন
হঠাৎ একবেলা অনশন।
অথবা— রান্নাঘরে রাধি দুজনা
মুগডালের খিচুড়ি ইলিশ ভুনা।
কোনো কোনো সন্ধ্যায়…
ছায়ানটে, শিল্পকলায়,
জাতীয় নাট্যশালায়।
অথবা— বিকেলে বেলকনিতে
বেতের মোড়ায় মুখোমুখি
আমরা দুজন সখা-সখি।
আমরা তো সুজন, তাই
এক কাপে চা খাই দুজন, আর
প্রতিটি উৎফুল্ল লগ্নে একেকটি চুম্বন, অথবা
আলিঙ্গন।
হঠাৎ দুঃখ দুঃখ সুখ— হয়তো কারণ ছাড়া,
যখন তুই দূরে থাকিস মনটা আমার হতচ্ছাড়া!
যখন একলা হই, তখনো—
থাকিস তুই
তখনো দুই
পাশে শুই
তুই তুই তখনো সিথানে তুই।
তখনো যে মনে মনে…
তোর সাথে কত যে কথা কই,
কতবার তোকে যে ছুঁয়ে দি
কত যে ছলছুতোয়!
আদরে আদরে শুষে নি ভিজে ঠোঁট
দিঘির জলে ডুবসাঁতার। ডুবস্নান। তারপর—
তারপর ঘুমিয়ে পড়ি
ঘুমের ভেতর কত গল্পের সাথে গড়াগড়ি
ঘুম ভেঙে আবার তুই
কত যে ফুল তুলি বেলি-জুঁই।
ভেতরবাড়িতে তখন এক সুগন্ধি নদী
সেই নদীতে বুঁদ হয়ে ভেসে থাকি…
আয় বন্ধু,
এভাবেই বাঁচি
এভাবেই থাকি
দুমড়ায়ে মুচড়ায়ে তোরে বুকে ভরে রাখি।
যতদিন আছি, অথবা আছিস
এভাবেই রাখি, অথবা রাখিস।
বন্ধু, ভালো থাকিস।
ও বন্ধু আমার…