বিভাজন
প্রতীক্ষিত অপেক্ষার শেষে, মৃদু কড়া নাড়লে,
খুলে যেতে পারে চন্দ্রের ডাক নামের ত হ্রী কার থ দীর্ঘ কার পিঠ কপাট—ঠোঁট রূপক রংতুলির নরম ছোঁয়া পেলে ফুটতে থাকবে চুমুফুল, আশ্চর্য চিত্রকর্ম লোলুপ জলরং, গড়িয়ে যাবে শরীর ক্যানভাস!
অবাঞ্ছিত ছিটেফোঁটা রং কপাল, গাল, থুতনির সৌন্দর্য বর্ধক ব্রণ প্রজ্জ্বলিত সন্ধ্যা তাঁরা, পায়ে খয়েরী আঁচড় কাতর রূপার নূপুর!
চোখের অবাধ আহবান অগোচরে গলতে থাকা মোমের শরীর, গভীর হয় নাভী পদ্ম পুকুর।
চিবুক বেয়ে দরদরিয়ে ঘামের মতন নেমে আসে রাত, কপাট ভিজিয়ে, লজ্জার পর্দা টেনে দিলে
অভিমান নিয়ে ফিরে যায় কৃত্রিম জোছনার আলো—
দূর থেকে ঠোঁট ফুলিয়ে অগ্রসর হয়, ধূসর রং তুলি—
নিজেকেই প্রতিবিম্ব প্রেমিকা ভেবে বসে আছি, শরীরে নজিরবিহীন অন্য শরীর একেঁ!
শল্যবিদ্যা
ডাক্তার নার্স আধুনিক শল্যবিদ্যা প্রয়োগ করে মাংসের ভূ-খণ্ড,মানব শরীরে—
একদলা মাটিতে ইনজেকশন পুশ করে।
অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের নিরিখে
অনুর্বর শরীর,চাষের অনুপযোগী,দৃষ্টি প্রেক্ষাপট বিধ্বস্ত মানুষের বাগান-
শস্য ভূমি সবুজ পাকস্থলীর রং-এ
ওরা সভ্যতার গান গাইছে।
ওরা গাইছে বীজ দাও,
ফুল দাও,ফল দাও
ফসল দাও;
উর্বরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে,
রক্ত শুকিয়ে মরা নদী,
ওরা বাঁচার গান গাইছে
জল দাও,পলি দাও,জোয়ার দাও,তুফান দাও।
দরদাম কষাকষির বাজারে-দীর্ঘশ্বাস পঁচা পুঁটি,
বুক পকেটে চাওয়া চোখ,
মেরুদণ্ড সোজা বাড়ি ফেরার পথ!
মিলিয়ে যাচ্ছে হৃৎপিণ্ডের বধ্যনালায়।
এই অনুপযোগী শরীরের ছুটি নেই,মুক্তি নেই,
তারই প্রতিবাদে
ভাতগুলো সব সাদা কাফন- হচ্ছে ভূখা মিছিলে শামিল!
দেহ প্রীতির শেষ ফসল
হাসপাতালের বেডের কাভার তাঁর প্রাথমিক কাফন,
ক্রয়কৃত কাফন দ্বিতীয় এবং শেষ আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
পাঁজরের গান
হে, বেভুলা দক্ষিণ হাওয়া খেলে যাও সবুজ ঢেউ বুক উত্তরের কচি ধান বীজতলা
দুপুরের নির্জনে ফাঁৎফাঁৎ উড়াও নতুন বৌয়ের কাঁচা হলুদ শাড়ি, উড়াও ঘোমটাপরা লজ্জা অম্লান বিকেল!
‘উড়িয়ে নাও গঙ্গাভিমুখে শব্দকথা
দেখব না মুখ বলা মায়ের অভিমানী কসম’
বাবার দীর্ঘশ্বাস বেগতিক টর্নেডো পূর্বাভাস
প্রেমিকার সমস্ত নালিশ!
বেভুলা হাওয়া শালিকের নরোম পালকের সাথে
বেনামি কমলা রঙ চিঠি এনে ফেলো আমার শশ্মান উঠানে, পাঁজরের কাছে
দিকশূন্য দুর্বোধ্য নূপুর নিক্কণ যুবতীর নাকছাবি
তুমি বেভুলা হাওয়া সুর পৌঁছে যাও
মৃত্যু গান জীবিতের পাশে!
হে হাওয়া, সমূহ সুর!
তিনি নূরজাহান
মেসতাময় সফেদ বরফখণ্ড,
হলুদআভা সূর্যের প্রথম কিরণ মুখমন্ডলে, সবুজ ভাবগম্ভীর হাসি।
দুপুরের বিরামচিহ্ন কপালের খাঁজে!
তিনি নূরজাহান,
কাঁথা সেলাই করে উপার্জিত অর্থে
অন্ন কিনেন
চড়ুই সন্তানের বাসা বুনেন তাজ কিংবা তাজমহল
নেই!
শীর্ণকায় চামড়া মেদহীন সহ্যনীয়, স্তন্যপানী,
শিরোধার্য মানুষ
মনোবেদনা, অপ্রাপ্তির সমন্বয়
জায়নামাজে কেঁদে কেঁদে দুঃখ বলা নারীমূর্তি
মায়াবদ্ধ সংসার যোজন বিয়োজনের লিপিকার
তারওপর
মানুষ -অমানুষ প্রতিপালন করার গুরুভার
নূরজাহান
তিনি মোটা কাপড় মোটা ভাতে বার্ধক্যে অগ্রসরমান রজব আলীর স্ত্রী।
উদ্ধরণ মুকুটধারিণী আমরা তাকে মা বলে ডাকি!
জোছনা সুপরিচিত শরীর
আয়না অন্ধে কর্পূর মুখ হাতরে বেড়াই
চুরি যাওয়া চাঁদ জোছনা যৌবনী তোমার চিবুকের কাছে ম্লান মসলিন, ধূসর বিষন্ন সুন্দর!
আশ্চর্য সৌন্দর্য
উরুচ্ছেদ সোঁদা চন্দন গন্ধ
ম-ম
ম-ম
বুকের বাতরে হোঁচট খাওয়া সুচয়না লজ্জায় মুখ লুকালে,
আমার রিইউজেবল প্যাড ধুয়ে নেমে যায় রক্ত স্রোত
কলঙ্ক নদী
কানাকুয়ো সুর পৌঁছে বিদীর্ণ অন্ধকারে বিনা
উদ্দেশ্য, উদ্দেশ্যে!
ভাতের আদিম রূপোর থালা উল্টে ঝরে
ঝর
ঝর
জোছনা
শৈশব, কৈশোরে অতিক্রান্ত শয্যাশায়ী বাসনার কাছে এ জোছনা সশরীর নারী
রন্ধ্রে রন্ধ্রে
তৃষ্ণা
ক্ষুধা!