সামাজিক লজ্জা
আমি যখন বাগানে ফুল তুলতে যেতাম
তোমাকে রোজ দেখতাম,
এক হাতে নিউজ পেপার, এক হাতে চায়ের কাপ
হালকা রৌদ্রে বারান্দার চেয়ারে তুমি।
ভোলাকে ধমক দিয়ে বলতে
” এই ভোলা চা-এ চিনি কম কেন?”
ভোলা বলত” দাদাসাহেব আপনার যে সুগার”
রাগ দেখিয়ে বলতে
“জানি জানি যা গে নিজের কাজ কর”..
খবরে চোখ বুলাতে বুলাতে বিড় বিড় করে
কি যেন বলতে,
বোধহয় খবর পছন্দ হত না।
হলুদ ফুলের ভরা চাঁপা গাছটার ওপারে
তোমার বারান্দা,
করকরে ধুতি পাঞ্জাবিতে বেশ লাগতো।
সামনে রাখা চকচকে সিলভার বাঁধানো ছড়ি,
ওটার প্রতি খুব যত্ন।
খুঁজে না পেলে বাড়ি মাথায় তুলতে।
তুমি রাগ করো না,
মনের অজান্তেই তোমাকে তুমি বলার অধিকার নিয়ে ফেলেছি।
ফুলের ডালি কখন ভরে যেত
তবু চাঁপা ফুলের খোঁজ মিটত না।
বুবাই চিৎকার করে বলতে
“ঠাম্মা তুমি আর কত ফুল তুলবে?”
তুমি কিন্তু একবার ঘুরে দেখতে,
আবার পেপার ঝেড়ে নিজের মত করে গুছিয়ে বসতে।
লজ্জা পেয়ে আমি সরে যেতাম।
রোজ তো ফুল তুলতে আসি,
অভ্যেস মত চেয়ারটাতেও তোমাকে খুঁজি।
কিছু দিন হলো চেয়ার টা খালিই থাকে,
তুমি নেই,
কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা শূন্যতা।
মনটা বড়ই অস্থির,
খোঁজ নিতে পারি না
লজ্জা করে, সামাজিক লজ্জা।
লাঠি ঠুকে ঠুকে বারান্দাতে পায়চারি করার শব্দটাও আর শুনতে পাই না!
ভোলাকেও ডাক না!
তুমি কি অসুস্থ?
বাড়ি বদলেছো?
নাকি…!