খুব সকালে সে একটা উবার কল করে মতিঝিলের দিকে রওনা হয়।
রাস্তা বেশ ফাঁকা।
রাইফেলস পার হবার পর গাড়ির কাচের উপর নামা গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি ক্রমাগত মুছে দিচ্ছে উইপার। রোড ডিভাইডারের বকুল গাছগুলো গতকাল রাতের তুমুল বৃষ্টিতে ধুয়েমুছে চকচকে হয়ে উঠতে পারতো, আবার বৃষ্টি না হয়ে আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিংগুলোর ফাঁক ফোঁকর দিয়ে সূর্য এসে পড়লে। এখন বিষণ্নতায় নত হয়ে আছে গাছগুলো। শীতের সকালে যারা সারা রাস্তায় বকুল ফুল ছিটিয়ে দিত। আর মনে মনে গুনগুন করে উঠতো, তুমি চলে গেছো বকুল বিছানো পথে।
এই লাইনটার ইমেজ তার ভাবতেই ভালো লাগে। কোনো এক প্রিয়া তার প্রিয়কে ছেড়ে চলে যাচ্ছে, যার চটির তলায় পিষ্ট হয়ে মারা যাচ্ছে বকুল। মিউজিক ভিডিয়োতেই এমন দৃশ্য দেখতে ভালো লাগে।
বাস্তবে এই রাস্তায়ই, তখনো ইয়োলো দোকানটি হয়নি, ঝুমবৃষ্টির সকালে শীলা অজ্ঞাত অভিমানে নিজের সালোয়ার একটানে ছিঁড়ে রাস্তার মাজখানে দাঁড়িয়ে পড়লো রিকশা থেকে নেমে।
দু-চারটা রিকশা বা আশেপাশের খোলা বা বন্ধ দোকান থেকে তখনই রাশি রাশি টেনিসবল যেন লাফিয়ে আসছিল চেটে খাবে বলে।
সেদিন সে বুঝেছিল মেয়েদের সঙ্গে তার সম্পর্ক কতটুকু পর্যন্ত সীমিত করা উচিত।
শীলা চাইতো সারাদিন তার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে থাকতে।
দুপাতা ফটোকপি করার দরকার হলেও তাকে রায়েরবাজার থেকে নীলক্ষেত আসতে হত। তারপর উদ্দেশ্যহীন ঘুরে ঘুরে বুড়িগঙ্গায় নৌকায় ভাসা।
কিছুতেই সে সুখী বা সন্তুষ্ট হতে পারতো না।
খুব দ্রুতই সেক্স করতে রাজি হয়েছিল, বলা যায় প্রস্তুতই ছিল; সে তার বানানো আবেগে প্রস্তাব করার পরই তারা পরস্পরকে জাপটে ধরে চুমু খেতে শুরু করে, এরই মধ্যে শরীরে হাত বুলাতে গিয়ে টের পায় শীলা পাজামার গিট খুলে পা দিয়ে টেনে নিচে নামিয়ে নিচ্ছে।
সে খুশিই হয়েছিল এত সহজে তাকে পাওয়া যেতে পারে দেখে। পরে অবশ্য জেনেছে, সে এমন একটি সম্পর্কে দ্রুত জড়িয়ে পড়তে চেয়েছিল তার বাসাটা নিরাপদ এবং যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে ভেবে।
শীলার মনে তার সম্পর্কে ধারণা তো ততটা সুবিধার ছিল না। দিলারার সঙ্গে তার জমাটি প্রেম এবং তাকে হঠাৎ প্রশ্রয় না দিয়ে কোনো এক বৈধব্যে-সাদা নারীর সঙ্গে মজে ছিল কিছুদিন।
শীলা তার হয়ে বলেছিল কিছুদিন দুজনের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে, যাতে দিলারা নিজেকে কিছু মানিয়ে নিতে সময় পায়।
সে উল্টো শীলার সঙ্গেই ফ্লাট করছিল।
শীলা সেদিন তার বাসায় থেকে গিয়েছিল হুইস্কি খাবার জন্য। যা হয় বমিটমি করে ভাসিয়ে দিয়েছিল ঘর। তাকে কাছে পেতে পারতো, এক বিছানায় ঘুমিয়েও, যদিও একতরফা সে কাউকে পেতে চায় না, সেটা নিছক আত্মমৈথুনের মতো মনে হয় তার কাছে।
সে তাকে তার পাজামা থেকে মুক্তি দিয়ে আলগোছে বিছানায় এনে শৃঙ্গার করে।
শীলা সেক্স করার সময়ও অসন্তুষ্টিতে ভূগতো, মনে হত তার যোনি নাভির নিচে নয়।
শীলার কথা মনে পড়ায়, মাঝে মাঝে মনে পড়েও, সে ফোন বের করে নাম্বার খুঁজে দেখে, নেই। ফেসবুক হাতরায়, নেই। তাদের মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদের সঙ্গে নেই। শীলার কলিগ কাম অর্ধেক প্রেমিক ইলিয়াসকে ফোন করে। ইলিয়াস ফোন রিসিভ করে না। লেসবিয়ান হতে চাওয়ার সঙ্গি মিলিকে ফোন করে, ধরে না। মিজানকে সুযোগ না দিয়ে তাদের কমন ফ্রেন্ডদের সঙ্গে গ্রুপ-সেক্সের দর্শক মিজানকে ফোন করে, ফোন করে ধরে না। চারদিক থেকে সাড়া না পেয়ে পেয়ে সে হতোদ্যম হয়ে সরাসরি শীলার মা-কেই ফোন করে।
মহিলার কণ্ঠের গলা, হ্যালো।
সে কাস্টমার কেয়ারের গলায় প্রশ্ন করে, শীলা বলছেন?
না, আমি ওর আম্মু। আপনি কে?
আমি রেড বাটন থেকে বলছি। শীলা আমাদের কাছে কিছু কসমেটিকস অর্ডার করেছিল, এই মুহূর্তে আমরা তা ক্যান্সেল করতে চাচ্ছি।
কবে করেছে?
সে ইতস্তত করে বলে, তাও অনেক আগে। এন্ট্রি দেখে বলতে হবে।
না, তার আর কসমেটিকসের দরকার নেই।
অপর প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেয়।
শীলার কী হতে পারে? কোথায় যেতে পারে? রাজশাহী মেডিকেল থেকে পাশ করে বিসিএসের চেষ্টা করছিল। হয়ত কোনো জেলা শহরে ডাক্তারি করছে, বা বিদেশে চলে গেছে। জানা যাবে হয়ত একদিন, বা কোনোদিনও না। এই পর্যন্ত ভেবে মার্গারিটের কথা মনে পড়লো, সুনীলের, নাকি সুনীলের গপ্পো ছিল বন্ধুদের ঈর্ষা জাগিয়ে তোলার; তবু মার্গারিট ব্যথার মতো চিরদিন বইয়ের মধ্যে রয়ে গেলো।
যেদিন রাস্তায় সালোয়ার ছিঁড়ে ফেলেছিল তখন রিটেন পরীক্ষা হয়েছে বা হবে। লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে তাকে বাসায় খুব বেশি আসতে বলতো না। নাকি পরীক্ষার আগের দিনই হবে, তার মনে পড়ে, সে সেক্স করে পরীক্ষা দিতে যাবে এমন বায়না ছিল; সে রাজি হয়নি, তখন সে সাংবাদিকতা ছেড়ে কাঠবেকার, দিদারের কিছু কাজটাজ করে দেয়। অন্য সময় হলে রাজি হতে আপত্তি ছিল না। ঠিকাদারি, তদ্বির, সন্ধ্যায় সাকুরায় বসে, রাতে দিদারের নতুন সংগ্রহের শরীর ছেনে বাসায় এলে ঘুমের ভেতরে নিজেকে নিক্ষেপ করা ছাড়া তার উপায় থাকে না।
সকালে দরোজা ভেঙে ফেলার মতো ধাক্কাধাক্কির শব্দে বাড়িওয়ালা উঠে আসে ছাদে। তার কাছে থাকা চিলেকোঠার গেটের চাবি দিয়ে তালা খুলে দেখতে পায় বরাবরের মতো সে ঘরের দরোজা জানালা খুলে ঘুমিয়ে অচেতন, নগ্ন।
বাড়িওয়ালা শীলাকে জিজ্ঞেস করে তারা সম্পর্কে কী হয়?
শীলা চুপচাপ দাঁড়িয়ে না থেকে গটগট করে হেঁটে রুমে ঢুকে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে, সে শশব্যস্ত তার নগ্নতা ঢাকবে, না কী করবে।
শীলা বাড়িওয়ালার দিকে ইঙ্গিত করে বলে, বলো, আমি তোমার কী হই? উনি জানতে চাইছেন।
সে ভূতে পাওয়ার মতো নির্বশেষ তাদের দেখে।
*তোপখানা রোডে এসে সে তিনজনের পরিমাণ নাস্তা নিয়ে নেয়।
পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে দশটা বাজেনি। কলিংবেল বাজতেই নীরার মা/খালা দরোজা খুলে তাকে ফিসফিস করে জানায় ঘরে গেস্ট আছে আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে পারবে কিনা?
সে চুপচাপ বাম দিকে ঢুকে কিচেনের পাশে এক চিলতে বারান্দায় টুলে বসে।
নীরার মা/খালা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যাতে সে বেশি শব্দ করে না ফেলে।
সে সিগারেট জ্বালায়। চা করতে পারলে ভালো হত। রান্নাঘরে বিরিয়ানির প্যাকেটে উচ্ছিষ্ট দেখে সে অনুমান করে ঘরে ৪/৫ জন থাকতে পারে।
নীরার প্রেগনেন্সির রির্পোট জানতে পারলে সে চলে যেতে পারতো। অতিথিদের ঘুম কখন ভাঙবে বা ঘুম ভাঙার পর তাদের প্রভাতী অধিবেশন আছে কিনা, সে সাংকেতিক মেসেজ পাঠায় নীরার ফোনে, সিন করলে যাতে নীরা বুঝতে পারে সে বাসায় এসেছে এবং কোথায় আছে। এরকম পরিস্থিতি তারা আরও আগেও সামলিয়েছে।
সে ফিরতি মেসেজের অপেক্ষা করে।
একটি হাসির ইমো স্ক্রীনের ভেসে ওঠে। এর অর্থ সে ধরে নেয় শিগগিরই এরা চলে যাবে। সে শব্দ না করে কিচেনের দরোজাটা আস্তে করে চাপিয়ে চুলায় টেকলি উঠায়, হয়ত চা হতে হতে গেস্টরা চলে যাবে।
টগবগ করে ফুটতে থাকা পানির মধ্যে চায়ের পাতা খুঁজে না পেয়ে গরম মশলা ছেড়ে দিয়ে অপেক্ষা করে।
তার সিগারেট শেষ হয়ে গেছে। নিচের দোকান থেকে কিনবে ভেবেছিল, দোকান বন্ধ থাকায় আর অন্যদিকে না গিয়ে উপরে উঠে আসে। সে গ্লাসে ফোটানো মশলা পানি ঢেলে নেয়।
দিদারের সঙ্গে ঝগড়ার পর কিছু খাওয়া হয়নি। পেটের ভেতর খুব গোলাচ্ছে। বিরিয়ানির প্যাকেটে যা উচ্ছিষ্ট আছে তা খেয়ে নিলেও হয়, কিন্তু বাসি খাবার তার পেটে সইবে না। সে নুডুলসের প্যাকেট খুলে কাচা নুডুলস চাবায়।
তার গা ফেটে ঘাম ছাড়তে শুরু করে। মুখে টক টক স্বাধ। সে তার রিভলবারটা ছুঁয়ে দেখে, কার খুলি উড়াবে ঠিক করতে না পেরে গরম কেটলির সঙ্গে ছোঁয়ায়। সে জানে এই পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে রাখতে হবে। সে ট্যাপ খুলে পানি খায়। কেটলির পানি অর্ধেক ফেলে তার মধ্যে প্রস্রাব করে। তারপর একটুকরো বারান্দায় গুটিশুটি মেরে শুয়ে থাকে।
এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার সময় তার কেবলই মনে হয় এই চোদানি চোদার দরকার কী?
নীরার কাছে সে কী চায়?
সে কি নীরার সঙ্গে সংসার করতে চায়?
নীরার মা/খালা তার সঙ্গেও সে মিলিত হয়েছে, বরং নীরার চেয়ে একটু বেশি বারই, তাকে সে চায়?
সে বিড়বড়ি করে বলে, আমি, আমি একটি পরিস্থিতি।
আমার পরিণতি দরকার। নিজেকে ফুরিয়ে ফেলা দরকার। সে রিভলবারটা বের করে নিজের মাথার সঙ্গে নল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে।
সে টের পায় রান্নাঘরে কেউ এসেছে। হয়ত উঁকি দিয়ে তাকে দেখেও থাকতে পারে। কাপে চামচ নাড়াবার শব্দে মনে হচ্ছে চা বানানো হচ্ছে।
সে এক থেকে এক হাজার পর্যন্ত গুনবে বলে মনস্থির করে।
এক, দুই, তিন… আর গোনে না, যদি হাজার পর্যন্ত গোনার পরও দেখে তাদের কোনো সাড়া নেই।
সে উঠে বসে।
ফ্লোরে একটি প্লেটে দুই টুকরো কেক আর একটি কলা ও এক কাপ চা। সে কলাটা আগে খেয়ে চায়ের কাপে কেক ডুবিয়ে খেতে শুরু করে, তার মনে পরে সে নিজেরই প্রস্রাবে কেক ডুবিয়ে খাচ্ছে, কিন্তু এতে তার কিচ্ছু যায় আসে না।
কিছুক্ষণ পর নীরার মা/খালা এসে ফ্লোরে বসে তার মুখের কাছে মুখ ফিসফিস করে বলে, ‘এরা বড় পার্টি। এদের রাগানো যাইবো না।’
সে তার কাছে মাথা ধরার জন্য প্যারাসিটামল চায়।
তিনি প্যারাসিটামল নিয়ে এলে সে এক লাফে উঠে কিচেনের দরোজা আটকে তাকে ফ্লোরে ঠেসে ধরে।
তিনি সজোরে ধাক্কা দিয়ে তাকে ফেলে দেবার চেষ্টা করে, তাকে ফেলতে না পেরে মুখে খামছি বসিয়ে দেয়। তার মুখ ব্যথায় জ্বলে ওঠে। সে রিভলবারের বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে তার নিয়ন্ত্রণ নেয়।
সে নিজেকে উত্থিত করতে পারে না। নিজের লিঙ্গর প্রতি সে ভরসা রাখতে পারছে না। সে শার্টের বোতাম খুলে তার মুখের উপর স্তন দুটি ঠেসে ধরে।
তার মনে পড়ে যায় মিলান কুন্দেরার উপন্যাসের একটি ঘটনার কথা। এক বিজ্ঞানী সুমিংপুলের ওয়াক ওয়েতে ইচ্ছুক এক নারীর উপর চেপে বসে লিঙ্গের উত্থানহীন অবস্থা নিয়েই নারীটিকে সঙ্গম করে। নারীটি নিজেকে প্রাণান্ত বাঁচাতে চায়, কিন্তু তার ঠোঁট জোড়া বিজ্ঞানীর মুখের ভেতর গোঁজা। পরে বিজ্ঞানী হোটেলে ফিরে এসে মনে করে যোনির খুব কাছেই ছিল মেয়েটির পায়ূ, পায়ূ মানে মুক্ত আকাশ, সে পায়ূ সঙ্গমের কথা চিন্তা করে হোটেলে বসে নিজেক উত্থিত করে মাস্টারবেশন করে।
সে নীরার মা/খালার অবস্থান পরিবর্তন করে নিজের শক্ত লিঙ্গটি ঠেসে তার পায়ূর মধ্যে প্রবেশ করায়, এসময় সে তার মুখ চেপে ধরতে ভোলে না। সে তার পায়ূ সঙ্গম দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করে, ততক্ষণে নীরা ‘ওরা চলে গেছে’ বলে কিচেনের দরোজায় ধাক্কা দিয়ে নড়বড়ে সিটকিনি ভেঙে ফেলে তাদের দেখে।
সে ড্রয়িং রুমে ফিরে এসে চুপচাপ বসে।
নীরা তার সামনে দাঁড়ায়, ‘চলো, আমার সঙ্গে এক্ষুণি বাইরে চলো।’
সে নীরার মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা করে রান্নাঘরের দৃশ্য তার মনে কেমন প্রভাব ফেলেছে। বাইরে গিয়ে শীলাকাণ্ড করবে কিনা।
সে জানতে চায়, বাইরে মানে কোথায়?
নীরা বলে, ‘তোমার বাসায়।’
সে ফোন বের করে দেখে এগারোটা বেজে গেছে। এখন রাস্তায় অফিস যাত্রীদের চাপ নেই।