উপনিবেশ – বাস্তবে ও ধারনায় – সুরঞ্জন দত্ত চৌধুরী

By Published On: September 22, 2021

উপনিবেশ – বাস্তবে ও ধারনায়
সুরঞ্জন দত্ত চৌধুরী

ব্রিটিশ শাসক অনেক টালবাহানা , দরাদরি করার পর শেষ পর্যন্ত যখন ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে ভারতবর্ষ নামক উপনিবেশটিকে দুই ভাগে ভাগ করে বাঁদরের পিঠে ভাগের গল্পের মত বাটোয়ারা করে ভারত ও পাকিস্তানের শাসনভার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও ভারতীয় মুসলিম লীগের হাতে হস্তান্তর করে, তখন আমি সবে হাই ইংলিশ স্কুলের প্রাথমিক বিভাগ অতিক্রম করে হাই সেকশানে সাত মাস পার করেছি। মায়ের মুখে জন্মাবধি গল্প শুণেছি তার বিপ্লবী বাবার কথা । মায়ের কৈশোরের পূর্বে থেকেই তিনি গৃহছাড়া , বনে জঙ্গলে বহুদূর কোন অচিন গাঁয়ের দরিদ্র কৃষকের ঘরে আত্মগোপন, ঢাকায় নিজের ধনী সন্তানহীনা পিসির বাড়িতে সশস্ত্র দল নিয়ে ডাকাতি করে অর্থসংগ্রহের রাত্রে আধো অন্ধকারে পিসি কর্তৃক চিনে ফেলার রোমহর্ষক গল্প শুণতে শুণতে ঘুমিয়ে পড়তাম । আবার ওই গল্পের শেষাংশের মজা পেতে বার বার মায়ের পাশটিতে গা ঘেঁসে বসতাম , মায়ের বর্ণনা শুণে কল্পনায় মাতামহের বিব্রত অবস্থায় পলায়নের ঘটনা শুণে চোখের সামনেই যেন তাঁর পলায়নপর ছবি ভেসে উঠত, হেসে কুটিপাটি হতাম, সাথে মা-ও হাসত। হাসি দুই কারণে । মাতামহই ছিলেন ঐ পিসির সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকার । , তালিবানের মত মুখ বাঁধা দূরে দঁড়িয়ে নকল কন্ঠে নির্দেশ দেয়া ডাকাত সর্দারের মুখে আবছা আলো পড়তেই বৃদ্ধা পিসির ধমক, “ গুপাল নাকিরে ? হারামজাদা গাধা , নিজের ট্যাহা পয়সা ডাকাতি করতে আইছস নিজেই দলবল লইয়া ?” দলের লোকেরা হতবাক হয়ে মুখ ঘুরিয়ে দেখে সর্দার দুড়দাড় করে ছুটে সিঁড়ি দিয়ে নেমে নীচতলার দিকে পালাচ্ছে আর পিছনদিকে পালঙ্কে আধশোয়া অবস্থায় বুড়ি তারস্বরে চেঁচাচ্ছে , “ আরে হারামজাদা কিছু খাইয়া যা, নিপাত্তা হইয়া আছস কদ্দিন খাওন জুটেনা তো কপালে জানে কেডায় , আয়রে বাপ পলাইস না ।“ মায়ের বিবরন শুণে হেসে গড়াগড়ি আমি । পরে নাকি এক বিশ্বস্ত চাকরের হাতে এক টিন মুড়ির মোয়া , কিছু টাকাপয়সা , আর কয়েকটা গয়নাগাঁটি দিয়ে স্বদেশী আস্তানায় পাঠিয়ে দিয়েছিল বুড়ি পিসি। “ আমার আর কি হইব সোনাদানা ট্যাহা পয়সা দিয়া , তিন কুলে তো আছে ঐ কুলাঙ্গারটা, স্বদেশী হইয়া না খাইয়া , পুলিসের ধাও য়া খাইয়া বনে জঙ্গলে উপাসী হইয়া দিন কাডায় । যাঃ, দিয়া আয় অগো কিছু।“ ( পরে পায়ে গুলি খেয়ে হিজলীর জেলে থেকে গ্যাংগ্রীন হলে বাবা আর মামার হাতে তুলে দিয়েছিল মৃতপ্রায় দাদুকে। তারা নিয়ে এসেছিল ময়মনসিংহের বাসায় এবং সেখানেই প্রয়াত হন )।

এসব আমার জন্মপূর্বের ঘটনা । আরো সব রোমহর্ষক এক একটি ঘটনা শুণে শুণে ঘুমোতাম মায়ের কোল ঘেঁসে । অবসরে বাবা শোণাতেন অনুশীলন পার্টি ভেঙ্গে যুগান্তর পার্টি প্রতিষ্ঠার কথা । বাংলার দামাল তরুণ বিপ্লবীদের নানান কর্মকান্ডের কথা । স্বাধীনতা আন্দোলনের , সশস্ত্র বিপ্লবের স্বপ্নদেখা সর্বত্যাগী স্বাধীনতা সগ্রামীদের শহীদ হবার কাহিনী । পরে যেগুলি পড়েছি স্কুলপাঠ্য বইয়ের পাতায় ছড়ানো ছিটানো টুকরো টুকরো গল্পকাহিনীতে । পরে ছাত্র আন্দোলনের স্রোতে সাঁতার কাটার সময় বিধান রায়ের মন্ত্রীসভার কয়েকজন সদস্য আমার পরিচয় পেয়ে তাঁদের গুরুর উদ্দেশ্যে হাত জোড় করে নমস্কার করে আমাকে স্রোতে ভাসার বদলে তীরে উঠে আসার উপদেশ দিয়েছিলেন । কপাল খারাপ, যে সাঁতার কাটার আনন্দে দৃঢ় প্রিজ্ঞার পাঠ নেয় আর মেতে থাকে তার কি আর তীরে উঠে শুকনো ডাঙ্গায় বসে থাকতে ইচ্ছে করে ?
কোন কথা বলতে গিয়ে কোন কথায় চলে এলাম ।
স্বাধীনতার ঠিক আগে পরে পূবে পশ্চিমে দাঙ্গা খুণোখুণী , লাশের আর ভীত সন্ত্রস্ত প্রাণ বাঁচিয়ে জীবন রক্ষার জন্য ভীত সন্ত্রস্ত উদবাস্তুদের পলায়নপর কাতার । এপার ওপার । পথে ঘাটে , ঝোপে ঝাড়ে, খালে বিলে , নদীতে মোহনায় স্রোতে ভাসা মরা মানুষের মিছিল । কে কাকে কেন খুণ করছে , খুণী বা নিহত , কেউ জানেনা ।
পরে পরেই রাস্তায় ঘাটে এখানে সেখানে , গ্রাম শহরে সারা বাংলায় , সারা ভারতে মিছিলে স্লোগান ওঠে , “ইয়ে আজাদী ঝুটা হায়, ভুলো মাৎ ভুলো মাৎ ।“ এখন যদিও পুরো স্লোগানটা জানি বলে মানেটাই বদলে গেছে , কিন্তু ছোটবেলায় জানতাম একদল মানুষ লাল পতাকা নিয়ে রাস্তায় চেঁচায় ,” এ আজাদী ঝুটা হ্যায় ভুলো মাৎ , ভুলো মাৎ “ — মানে এই স্বাধীনতা ভুয়া আসল স্বাধীনতা নয়। মেজদাদা ম্যাট্রিক দেবে । বলতো , “শর্তাধীন স্বাধীনতা আবার স্বাধীনতা নাকি? কমন ওয়েলথের মধ্যে থাকতে হবে , ইংলন্ডেশ্বরীর রাজত্বের আওতায় , তাহলে কি হল, কোথায় স্বাধীন হলামরে আমরা ?” আমি তখন কিছু বুঝি , অনেকটাই বুঝিনা । তখনো নাকি ভারত আসলে উপনিবেশই ছিল, স্বাধীনতার পরেও । দাদারা বলতো। অনেক বড় হয়ে শুণেছি ওটা অর্ধেক স্লোগান, পুরোটা হল, “আম জন্তা ভুখা হ্যায়, ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়” । আরেকটু বড় হয়ে ইস্কুলের গন্ডী পেরিয়ে নিজেই বলতে শুরু করেছিলাম , আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছি বটে কিন্তু অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাইনি; উপনিবেশ রয়েই গেছি। পাউন্ড স্টার্লিং , কমনওয়েলথ গেমস , ক্রীকেট খেলা , প্রতিরক্ষা জোট ইত্যাদিতে ব্রিটিশ রাণীর মুকুটের স্বীকৃতি, নেতৃত্ব আর প্রাধান্য ।
এর পরেই পাউন্ড ছেড়ে ডলার। বাঁধন শিথিল । আয়ার্ল্যান্ড নিয়ে খোদ ইংলন্ডেশ্বরীর রাজত্বই ল্যাজে গোবরে , আগের উপনিবেশগুলিকে ক্লাবের মধ্যে রাখা কি আর যায় ? আমরা এখন স্বাধীন । এখন আর উপনিবেশের সংজ্ঞায় পড়িনা ।

এখন প্রশ্ন হল, এখন কেউ যদি বোঝাতে আসে , এখনো তোমরা উপনিবেশই রয়ে গেছ। দেখ, অফিস আদালত, ইস্কুল কলেজ দক্ষিণ ভারত, বাংলায় উত্তর পূর্ব ভারতে ইংরেজির রমরমা , পোশাকে প্যাণ্ট শার্ট কোট টাই স্যুট, দোকান রাস্তায় সাইন বোর্ডে সব ইংরেজী জ্বলজ্বল করে , তবে কিসের স্বাধীনতা , তোমরা এখনো উপনিবেশের বাসিন্দা । “ আংরেজী হাটাও, দেশ বাচাও” “ইংরেজী ভাষা হঠাও, বাংলা লাও” “চাহে হিন্দি ঊর্দু গুজ্রাতি, মারাঠী , ভারতীয় ভাষা লাও—দেশ আজাদ করো” । দুদিন বাদে পশ্চিমবঙ্গে বলবে, প্যান্ট শার্ট পোড়াও , বাঙ্গালী হও । রাজনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস , রান্নাবান্না, খাওয়া দাওয়া , আচার আচরণ , লেখা পড়া সব কিছুতেই উপনিবেশের ভুত দেখাবে । সব হাঁড়ি হেঁসেল আলাদা করতে হবে । এমনকি রামমোহন, বিদ্যাসাগর , রবীন্দ্র নজরুল এবং এদের অনুসারীরাও বেবাক ইংরেজদের প্রভাবিত । তাই বোধের জগত পাল্টাও। সব উপনিবেশের দূর্গন্ধে কলুষিত।

আমি ভাবছি অন্য কথা , । সব কিছু কিছু মানতে খুব একটা আপত্তি নেই আমার । কারন আমার দেশ , আমরা যা চাইবো তাই করবো , তবে না স্বাধীন , তবে না উপনিবেশের শৃঙ্খল ছেঁড়া যাবে ! বটেই তো , শুণতে তো ভালই শোণাচ্ছে । এ তো জাতিসত্ত্বার আত্মশ্লাঘা গঠনের , জাতীয় সত্ত্বা গঠনের , জাতীয়তাবাদ গঠনের স্লোগান । ভুলটা কোথায় ?
এর পরেই যখন ধ্বনি উঠবে , বায়রন , শেলী , কীটস , এ্যলেন পো, মিল্টন , দান্তে শেক্সপীয়র, মলিয়ের পড়া চলবেনা , সব বাতিল। দা ভিঞ্চি থেকে পিকাসো সব বাদ । বিটোফেন থেকে ফ্রেডি মার্কারি, ফ্র্যাংক সিনাত্রা , প্যট বুন, , এল্ভিস প্রিস্লে ইত্যাদিও বাদ। জসীম উদ্দিন , হুমায়ুন আজাদ , শামসুর রহমান , আবুল হাসান , শহীদ কাদেরি, আব্দুল করিমশাহ হাসন রাজা , সব বাদ । ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, ইকবাল, নূরজাহান, গুলাম আলি সব বাদ। যেমন পাকিস্তান ফরমান জারি করেছিল, রবিঠাকুর বাদ। এখন মাঝে মাঝে শুণি বাংলাদেশেও ভারতীয় কবি লেখকদের ধ্রুপদী রচনাও বিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তক থেকে বহিস্কৃত। এমন কি অনেক বাংলাদেশী মানুষ মাঝে মাঝেই বলার চেষ্টা করেন, বাংলাদেশ আন্ত :সম্পর্কে, বাণিজ্যে, ভাষায় সংস্কৃতিতে ভারতের উপনিবেশের চরিত্রেই রয়ে গেছে। মানে বিদেশের ভাষার চলন বলন , ধারা সব বাদ না দিলে তুমি উপনিবেশের পরাধীন জাতি । এইখানে এসেই আটকে যাই ।

উত্তর কৈশোর থেকেই শুণে আসছি গুণী শ্রদ্ধেয় শিক্ষক , পরে কবি সাহিত্যিক দার্শনিকদের কাছে মানুষ সভ্যতার উত্তরণে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে , একাকীত্ব ছেড়ে গোষ্ঠীতে , ছোট ছোট এলাকাকে প্রসারিত করে গ্রামে অনেকে মিলে মিশে , তাকে আরো বড় করে রাজ্যে , রাজ্য জুড়ে জুড়ে রাষ্ট্রে ক্রমাগত প্রসারিত হয়েই চলেছে । ভাষা সংস্কৃতির পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জাতিসত্ত্বার প্রসার ঘটিয়ে সমগ্র মানব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ এক বৃহত্তম প্রাণী গোষ্ঠীতে পরিণত করে এই গ্রহে এক মহামিলনের সভ্যতা গড়ে তুলতে চাইছে । মানুষ বিশ্বনাগরিকত্বের সাধনায় মশগুল । আর এই সমগ্র বিশ্বকে একটি গ্রাম কল্পনা করে মানবধর্ম ও মানবজাতি রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে । সেক্ষত্রে এই সভ্যতার বস্তুগত দিকদর্শনের বিপ্রতীপে , খন্ড খন্ড করে মানব প্রজাতিকে বিভক্ত করে রাখার প্রচেষ্টাকে সঙ্গত মনে করে মেনে নিয়ে কিছু ক্ষমতালিপ্সু স্বার্থান্ধ মেকী মানব দরদী লোকের বশ্যতা স্বীকার করতে হবে । কখনো ধর্মবিশ্বাসের দোহাই দিয়ে , কখনো জাত পাতের কথা তুলে , কখনো বা খন্ড খন্ড সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে । এবং সে যে কি ভয়ংকর তা ধর্মযুদ্ধ, ক্রূশেড , জেহাদ থেকে শুরু করে কুলীন জাতীয়তাবাদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষনা করে লোকক্ষয়ী দু দুটো বিশ্বযুদ্ধ প্রমান করে দিয়েছে । এখনো ধর্মবিশ্বাসে নামে মানবের পারলৌকিক কল্যাণের প্রচারে সমস্ত বিশ্বে ধর্মপ্রভুত্ব সৃষ্টির মহড়া চলছে , অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে তা লক্ষ্যনীয় ।
কিন্তু আরো দুশ্চিন্তার কারণ উঁকি দিচ্ছে “স্বাতন্ত্র্যের “ বেশে মননের জগতে আক্রমন সংকীর্ণতার ভাইরাসের । চলমান গ্রাহ্য ভাষা সংস্কৃতিকে খন্ড করে ছোট ছোট এলাকায় আবদ্ধ রাখার এক সংকীর্ণতার অসুস্থ চিন্তায় আক্রান্ত কিছু মানুষ । আন্তর্জাতিক প্রসারতার উদারতাকে তারা চ্যালেঞ্জ করছে ।

জ্ঞান যেথা মুক্ত
যেথা গৃহের প্রাচীর
বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি

বিশ্বকবির এই উদার দার্শনিকতাকে উপেক্ষা করার মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চাইছে ক্লীন্ন কূমন্ডূকতায় । ভাষা পালটে ভাগ করো, আইডেন্টিটি তৈরি করো, একরৈখিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করো , জাতিসত্ত্বার শ্রেষ্ঠত্বের এখতিয়ার তৈরী করো, ইত্যাদি ইত্যাদি । আপাত দৃষ্টিতে একে নির্দোষ রম্য প্রচেষ্টা বলেই মনে হয়। কিন্তু যখনই একে উপনিবেশ মুক্তির উপায় বলে প্রচারিত হয় , সচেতন মানুষের তখনি একটু নড়ে চড়ে বসতে হয়। উপনিবেশ তো আসলেই একটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শব্দবন্ধ। রাজনৈতিক বিষয় । তবে তো এটি একটি রাজনৈতিক কার্যক্রম, সংস্কৃতির নির্মোকে । এ এক উগ্র মৌলবাদী চিন্তার শব্দসেতু।

যে কোন মৌলবাদী চিন্তা উদারতাকে বিনষ্ট করে । ব্যক্তিগত চিন্তার জগতকে ক্রমশ সংকীর্ণ করতে করতে , এক অন্ধকূপের নিবাসী করে তুলবে আমাকে । অথচ প্রথমে এর পোশাক ছিল জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পোশাকে সাজানো । আমি বুঝতেই পারবোনা এই ভাবনা কখন যে আমাকে অন্ধকার কালোয় ঢেকে দিয়ে এক কিম্ভুত কিমাকার অস্তিত্বে নিক্ষেপ করবে । আমি রাজি তো ? সাংস্কৃতিক উপনিবেশের ক্ষেত্রটির প্রভু কে ? উত্তর সঠিক জেনে নেবার অধিকার প্রতিটি বঙ্গভাষীর আছে । স্বাধীনতা যেমন জন্মগত অধিকার , বাংলা ভাষার ভালোমন্দ চিন্তা , ভালোর সপক্ষে , মন্দের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর অধিকারও প্রতিটি বাঙ্গালীর জন্মগত । ১৯৫২ তে সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ আট, আর ১৯৬১ তে বরাক উপত্যকায় প্রথম নারী কমলা সহ কানাই তরণী শচীন্দ্র চন্ডিচরন সহ ৯ শহীদ বুকের রক্ত ঢেলে শহীদ হয়েছিল চণ্ডীদাস রবীন্দ্র নজরুলের চর্চিত বাংলাভাষার জন্য ? সেই ভাষার উত্তরাধিকার বিশ্বব্যাপী প্রতিটি বাংলাভাষী বাঙ্গালীর। কোন কৃত্রিম বিকৃতির বশ্যতা স্বীকারের জন্য নয়। সশস্ত্র বিপ্লবীর উত্তরাধিকার , ভাষা বিপ্লবীদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানে যারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারে , তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সজাগ থাকবেই বাঙ্গালীর শতশত বছরের অতীত থেকে বিবর্তিত বাংলার সংস্কৃতি , ভাষা আর মানবতাবাদী উদার দৃষ্টিভঙ্গী রক্ষার স্বার্থে ।

আমরা আমাদের মাতৃভূমি বা মাতৃভাষার ইজারাদারী কাউকে দিইনি। বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষা ভাষাভাষীর এই জন্মগত অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে তার প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে উঠবেই।

Share:
0 0 votes
Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Nandik Shop