একগুচ্ছ অ্যাফরিজম (১-৮২) – সরদার আরিফ উদ্দিন

By Published On: July 29, 2021

একগুচ্ছ অ্যাফরিজম (১-৮২)
সরদার আরিফ উদ্দিন

১. একটা সময় চাকরিতে টিকে থাকার জন্য লবিং করতে হতো, কিছুদিন আগেও চাকরি পাবার জন্য লবিং হতো, এখন চাকরি বিজ্ঞাপন দেখার পর থেকেই প্রাথমিক তালিকায় (শর্ট লিস্ট) থাকার জন্য অনেক বেশি লবিং করতে হয়। দিনে দিনে অনেক উন্নতি হচ্ছে!!!

২. আমরা সবাই প্রকাশ্যে সত্যের পূজা করি কিন্তু আসলে মিথ্যেকে আঁকড়ে থাকতে চাই।  সত্য এবংমিথ্যা দুটোরই প্রয়োজন এবং উপস্থিতি আমরা অস্বীকার করি কিন্তু প্রতিনিয়ত দুটো’তেই অবস্থান করি, দুটো’রই রস নিংড়ে জীবন উদযাপন করি। 

৩. বিচ্ছিন্নতার ভেতরেই একাকীত্বের অবস্থান কিন্তু একাকীত্বের ভেতরে বিচ্ছিন্নতা নাও থাকতে পারে।

৪. সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য- চরম এক মিথ্যের, মিথ্যা উপস্থাপন। সব সত্যই সুন্দর হয় না আবার সব সুন্দরই সত্য হয় না 

৫. গরুর পা’য়ের  চেয়ে মগজের মুল্য বেশী, মানুষের উল্টো, মগজের চেয়ে  পা’য়ের মুল্য বেশী।

৬. একটি ভুল সিদ্ধান্ত পুরো জীবনকে তছনছ করে দিতে পারে আবার অনেক ভুল সিদ্ধান্তের সম্মিলিত আক্রমনেও জীবনে কোন আঁচড় কাটে না। সেই ভুল সিদ্ধান্ত কোনটি সব সময় তা খুঁজে পাওয়া যায় না, টেরও পাওয়া যায় না ।

৭. সুনিপুণভাবে শাড়ি পরিহিত নারী প্রকৃতির সকল সৌন্দর্যকেই হার মানায়, তাকিয়ে থেকে এক জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়।

৮ . মানবিক হওয়াটা বাধ্যতামূলক নয় কিন্তু সামাজিক হওয়াটা বাধ্যতামুলক। মানবিক হলে অন্যের উপকার হয় আর সামাজিক হলে নিজের উপকার হয়।

৯. তোষামোদ একটি উচু স্তরের দক্ষতা, সবার থাকে না, চাইলেও তা অর্জন করা যায় না।

১০ . স্তুতিবাক্য সবাই উপভোগ করে, কেউ প্রকাশ করে আর কেউ করে না। বোধকরি ঈশ্বরের চরিত্রের এই গুনটি ইচ্ছে করেই মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন, যেন মানুষ ব্যস্ত থাকতে পারে। 

১১. নারীদের আছে মগজ এবং শরীর, পুরুষের থাকে শুধু মগজ। নারীর সাথে একজন পুরুষের প্রতিযোগিতা নিশ্চিত পরাজয়।

১২. আজীবন ব্যাচেলর থাকা মানুষগুলোকে আমার দুর্দান্ত সাহসী মনে হয়।  সমাজ, সংস্কার, প্রথা, লোভ-আকর্ষণ, নিয়ম-নীতি  সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করে জীবনকে চালিয়ে নেয়া খুব সহজ কাজ নয়। 

১৩. জীবনের সবচেয়ে কঠিন কাজ হল ‘শূন্যের দেয়াল’ ভাঙ্গা। সবার জীবনেই কোন না কোন শুন্যের দেয়াল থাকে, কেউ ভাঙতে পারে, কেউ পারে না ।

১৪. জীবন সমীকরণের ডান পাশে থেকে এক (১), বাম পাশে অসংখ্য বিষয়ের উপস্থিতি দেখা যায়।  সফলতা নির্ভর করে কে কত কম সংখ্যাক বিষয়ে অধিক মনযোগী হতে পারে তার উপর। 

১৫. জীবন ও জগত সম্পর্কে ভাবনা যত কম থাকবে সুখ এবং উপভোগের জৌলুস ততই বাড়বে।  দুটো একসাথে বাড়বে কিংবা কমবে, তা হতে পারে না।

১৬. বিশেষজ্ঞ হওয়ার চেয়ে ব্যবস্থাপক এর চাহিদা এবং মুল্য বেশী। এ দেশ, জাতি, সমাজ বিশেষজ্ঞ চায় না, দরকারও নেই। 

১৭. রাজনীতি নিঃশ্বাসের মত, প্রতি সেকেন্ডেই প্রয়োজন হয় কিন্তু সবাই টের পাই না ।

১৮. ঈশ্বরের গুণকীর্তন আর ক্ষমতাবানদের গুণকীর্তন একই জিনিস। দুটোর পেছনেই থাকে স্বার্থ এবং লোভ, পার্থক্য শুধু ইহকাল এবং পরকাল। 

১৯. নাস্তিকতা চর্চা একটা ফ্যাশন, যুগের চাহিদা এবং বয়সের চাহিদা। 

২০. ধর্মকে গালি দেয়া ফ্যাশন, ধার্মিক থাকা পশ্চাদমুখিতা, নাস্তিক হওয়া আধুনিকতা এবং ধর্ম চর্চা না করা উদাসীনতা। সবগুলোই নিজের জন্য, মানুষের কোন কাজে লাগে না ।

২১. কথা ও কাজে মিল রাখা এবং বাড়াবাড়ি রকমে স্থির থাকা এ দেশ ও সমাজে অমার্জনীয় অপরাধ

২২. মেয়েদের গায়ের গয়না শুধু পুরুষদের আনন্দ দেবার জন্যই

২৩. বিধাতাকে আমার সাম্যবাদি মনে হয় না বরং পুজিবাদের তীর্থ স্থান মনে হয়

২৪. নারী দেহের প্রকৌশল  আমার কাছে অন্যায় রকম সৌন্দর্য এবং বিধাতার বাড়াবাড়ি মনে হয়।

২৫. বাংলাদেশে মানুষের শত্রু ভাগ্য ইরসনিয় আর বন্ধু ভাগ্য শোচনীয়

২৬. এদেশে উচ্চকণ্ঠ হলে অধিকার হারায় এবং করুনা কিংবা দান নেয়ার দাবি জন্মায়

২৭. একজন নাস্তিকই ধর্মের নামে দিনরাত খুনোখুনির মীমাংসাকারী হতে পারে 

২৮. সমানে সমান হলে হয় একে অন্যের দেয়া নেয়াকে বলে উপহার আর ছোট বড়’র মধ্যে দেয়া নেয়া হলে তাকে বলে দান কিংবা করুণা

২৯. ঈশ্বরই একমাত্র জায়গা যেখানে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার দায়ভার চাপানো যায় , নিশ্চুপ ঈশ্বর তা মেনে নেয়, আপাদত ।

৩০. ঈশ্বর বাবা মায়ের মতই নিষ্ঠুরভাবে দরিদ্রদের তেজ্য করে

৩১. একটি অন্যায়কে হালাল করতে আরও অনেকগুলো অন্যায় করতে হয়।  প্রথম অন্যায়টি কষ্ট হলেও মেনে নেয়া যায়, পরের অন্যায়গুলো মেনে নিতে অনেক বেশী  রক্ত ঝরাতে হয়।

৩২. জনপ্রিয় মানুষগুলো সব সময়ই নিজের কাছে অ-জনপ্রিয় হয়। সেজন্য তারা একা থাকতে ভয় পায়, নিজের মুখোমুখি হতে তাদের আত্মা কেঁপে উঠে। মানুষের মাঝে থেকে তারা নিজের কাছে নিজেকে লুকোয়।

৩৩. বাংলাদেশে জ্ঞান একটি বোঝা। যাদের এই বোঝা বহন করতে হয় না তারা সহজেই তর তর করে সিঁড়ি বেঁয়ে উপরে উঠে যেতে পারে। 

৩৪. অহেতুক প্রশংসা করা আদতে ঝাড়ু দেয়ার কাজ। উপরে যাবার সিঁড়িতে নানা ধরমের নোংরা আবর্জনা জমে থাকে। প্রশাংসার মাধ্যমে সেগুলোই পরিষ্কার করা হয়।

৩৫. সবচেয়ে বেশী অন্যায় করা মানুষগুলোর স্ত্রীরা (কিংবা উল্টো হতে পারে) সবচেয়ে বেশী ধার্মিক হয়। মানুষকে ধোঁকা দিয়ে আরও বেশী অন্যায় করার সুযোগ তৈরি হয় অন্যদিকে ব্যাল্যান্স করার পদ্ধতিতে ঈশ্বরের সাথেও চালাকি করার চেষ্টা করা হয়। এক ঢিলে দুই পাখী মারার চেষ্টা।

৩৬. নারীবাদীরা পুরুষতন্ত্রের সবচেয়ে বেশী সুবিধাভোগী সেজন্যই তারা নারীবাদী চর্চায় ব্যস্ত সময় কাটায়।  একই সঙ্গে গাছের টাও খায় আবার তলার টাও কুড়ায় ।

৩৭. মার্কেটে মাত্র দুটো পন্যেরই উপস্থিতি দেখা যায়। পুরুষদের শ্রম আর নারীদের শরীর। মগজ পণ্যটি এখন আর মার্কেটে পাওয়া যায় না।

৩৮. পুঁজিবাদ নারীর অন্তর্বাসকে করেছে বহির্বাস আর মৌলবাদ বহির্বাসকে করেছে অন্তর্বাস, মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ কিন্তু কেবল মৌলবাদই নারীবাদের প্রধান শত্রু।

৩৯. ঈশ্বরের জন্ম যদি বাংলাদেশে হত তাকেও একটা চাকরির জন্য তদ্বির করতে হত, এমনকি প্লেনের টিকেট  কিংবা ট্রেনের টিকেট এর জন্যও। এদেশে তদ্বির এবং ক্ষমতা ছাড়া কিছুই হয় না।

৪০. ধর্মের বানীতে অবিশ্বাস করার কোন মানে হয় না। বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষকে দেখলেই শয়তানের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।

৪১. মানুষের জীবনচক্র উল্টো পথে ঘুরলে ভাল হত। বৃদ্ধ হয়ে জন্মাবে আর শিশু হয়ে মৃত্যুবরণ করবে, তাহলে সম্ভাবনার আলোয় কেউ আর প্রবীণদের উপেক্ষা করার সাহস পেত না।

৪২. উপেক্ষা এবং সম্ভাবনার সাথে শক্ত সম্পর্ক আছে। যে কোন উপেক্ষার সৃষ্টি হয় সম্ভাবনার মৃত্যু থেকে ।

৪৩. অপেক্ষা এবং উপেক্ষা দুটোই হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। প্রথমটি সাময়িক কিন্তু দ্বিতীয়টি অনেকটাই স্থায়ী। ক্ষতির মাত্রা বিবেচনায়, প্রথমটি স্বল্প মাত্রার, দ্বিতীয়টির ক্ষতি সুদূরপ্রসারী।

৪৪. কেউ কেউ বছরে ৩৬৫ দিন উদযাপন করে আবার কেউ বা একটাই দিন ৩৬৫ বার উদযাপন করে।

৪৫. মানুষকে ‘মেনে নেয়া’ এবং ‘মনে নেয়া’, দুটো কাজই করতে হয়। প্রথমটিতে প্রানের মৃত্যু ঘটে, দ্বিতীয়টিতে প্রানের সজীবতা বাড়ে। আমরা জীবনের বেশীর ভাগ সময়, প্রথমটি করতেই বাধ্য হই ফলে জীবিত থেকেও মৃত্যুবরণ করি। 

৪৬. বিশ্বাস থেকে বিশ্বাস করা আর অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বাস করা অনেক পার্থক্য।  আফসোস হল, ধর্ম কখনোই অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বাস করতে উৎসাহ দেয় না কেবল বিশ্বাস থেকে বিশ্বাস করতে বলে। 

৪৭. স্থুল ভাবনার মানুষগুলোকে দেখলে আমার খুব ঈর্ষা হয়, হাজারো চেষ্টা করেও আমি তা অর্জন করতে পারবো না।

৪৮. জীবনের বেশীর ভাগ সময় কেটে যায় অতীত কিংবা ভবিষ্যতে থেকে, বর্তমানে থাকার দক্ষতা খুব মানুষের থাকে, হাতে গোনা দু একজন। যাদের থাকে একমাত্র তারাই সুখী মানুষ । সুখের সংজ্ঞা হতে পারে- বর্তমানে থাকতে পারাটাই সুখ

৪৯. পুরুষ শিকারি নারীদের অত্যাচারে ইদানীং অফিস আদালতে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ছে । চাকরিজীবী বেশির ভাগ নারীর একটাই কাজ, উঁচু পদে থাকা পুরুষদের শিকার করা ।

৫০. বাংলাদেশে পিঠ চুলকানি সমিতি বেড়ে যাচ্ছে আশংকাজনক হারে। চুলকানি বাড়ছে গাণিতিক হারে কিন্তু পিঠ চুলকানি সমিতি এবং এর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।

৫১. পোড় খাওয়া মানুষের কাছে যা শেখা যায় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের কাছেও শেখা যায় না

৫২. একজন ড্রাইভার কাছ থেকে শেখার আছে অনেক, সকল শ্রেণীর মানুষের ভেতরটা তিনি খুব সহজে দেখতে পারেন এবং খুব নীরবে দেখে থাকেন

৫৩. ক্ষমতা বলে ছুটিগুলো জমিয়ে রাখতে পারি কিন্তু সময়গুলো জমিয়ে রাখতে পারি না। অসহায় আকুতি!!

৫৪. দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ অপেক্ষা শুয়ে থাকা মানুষকে, মানুষ মনে মনে বেশী পছন্দ করে কিন্তু প্রকাশ করে উল্টোটা

৫৫. স্তরায়িত প্রেক্ষিতে কখনই সত্যিকারভাবে অংশগ্রহণ হতে পারে না। ক্রমাগতই অংশগ্রহণ করতে বলা, প্রতারণা এনং শোষণ করার কৌশল ছাড়া আর কিছুই না।

৫৬. সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাসকে আমার পরমানন্দের মনে হয় কিন্তু কিছু বাস্তবতা, কিছু প্রশ্ন মাঝে মাঝেই বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দেয়, পরমানন্দকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে তখন আরও বেশি অশান্তি তৈরি হয়।

৫৭. জ্ঞানীরা ধর্মকে লাইব্রেরী মনে করে আর মূর্খরা ব্যমাগার (অনুশীলন কেন্দ্র) মনে করে। শুধু জ্ঞান আহরণ কিংবা অনুশীলন দুটোই বিপদজনক। এর মধ্যে সম্মিলন ঘটানো খুব জরুরী।

৫৮. ‘বৈবাহিক সম্পর্ক’ ধারনাটি সমস্ত জীবনকে গ্রাস করে ফেলে। বিয়ে পূর্ববর্তী সময় কাটে স্বপ্ন আর বিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে, পরবর্তী সময় কাটে বৈবাহিক সম্পর্ক কেন্দ্রিক কার্যকলাপ  আর আক্ষেপ নিয়ে।  জীবন আর জীবনকে স্পর্শ করতে পারে না।

৫৯. জীবনকে প্রত্যাখান করতে পারা দুর্দান্ত এক সাহসের ব্যাপার

৬০. অনন্ত কাল বেহেস্ত লাভের জন্য আমি ধর্ম চর্চা করি না, নৈরাজ্যের মধ্যে ধর্ম আমাকে দু দণ্ড শান্তি দেয়।

৬১. নারীরা প্রকৃতিগত ভাবেই ক্ষমতাশালী, নুতন করে ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ চর্চা পুঁজিবাদের নুতন কৌশল। নারীরা পর্দার আড়াল থেকে শাসন করে যা অনেক বেশী শক্তিশালী পর্দার সামনে থেকে শাসন করার চেয়ে।

৬২. নারীর ক্ষমতায়ন চর্চা আদতে ‘এনিমি দিসকোর্স’ তৈরি করছে, তাদের অনেক বেশী নাজুক অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং সর্বোপরি সমাজে মানবিক সূচকগুলোকে আঘাত করছে। 

৬৩. দায়িত্ব জ্ঞান বাড়লে বেদনার ফাঁদে পড়তে হয়। দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ তাই বেশী সুখী হয় অথবা সুখী মানুষগুলো দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়।

৬৪. আমরা যা বলি বা যা যা শেখাতে চাই, বাচ্চারা তাই শেখে কিন্তু আমরা যা বলি না বা বলতে চাই না কিংবা শেখাতে চাই না বাচ্চারা সেখানে থেকেই সবচেয়ে বেশী শেখে।

৬৫. আমরা কোথাও অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করি আবার কোথাও করি না, প্রথমটায় করি চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য, চাকরির স্বার্থে আর দ্বিতীয়টি চাকরি হারাবার ভয়ে। দুটোর কোনটাতেই মানবিক আবেদনে নেই, অন্যের উপকার নেই। প্রতিবারই আমরা নিজের স্বার্থের কথাই চিন্তা করি।

৬৬. বাংলাদেশে পিঠ চুলকানি সমিতির সদস্য সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে!

৬৭. যথাযথা জ্ঞান চর্চা ছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন চর্চা ভয়াবহ এক সামাজিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়।

৬৮. সমসাময়িক প্রেক্ষিতে জ্ঞান অর্জন অপেক্ষা কৌশলের দক্ষতা অর্জন অধিক জরুরী, অভিযোজনের স্বার্থেই ।

৬৯. উচু বুক ওয়ালা মেয়েরা একটু নির্বোধ টাইপের হয়। তারা উচু বুক ব্যবস্থাপনা এবং প্রদর্শনী আয়োজনেই সমস্ত সময় ব্যয় করে ফেলে।

৭০. আমার ধারনা বিদেশের জীবন অনেক পরিশ্রমের কিন্তু কষ্টের না আর বাংলাদেশের জীবন ঠিক তার উল্টো।

৭১. সারাদিন কাজের চেয়ে স্ট্রেসই বেশী থাকে। বাংলাদেশের অফিসগুলো কাজকে আনন্দদায়ক করে তুলতে পারে না, এটাই আমাদের দেশের একমাত্র ব্যর্থতা মনে হয়। পশ্চিমা দেশগুলোতে ঠিক তার উল্টো চিত্র, আর ওটাই আমার মূল আকর্ষণ।

৭২. কেবল মাত্র রোবট এর আচরণই বোঝা যায়। ঈশ্বর একটি রোবটও তৈরি করেনি, মানুষ একটিও মানব শিশু তৈরি করতে শেখেনি

৭৩. মানুষকে বোঝার ক্ষমতা ঈশ্বর মানুষকে দেয়নি। মানুষ কেবল অনু ক্ষমতা আর অনু ভাবনা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে পারে।

৭৪. অসংখ্য প্রত্যাশা নিয়ে  একেকটি মানব শিশু পৃথিবীতে আসে, ফিরে যায় একরাশ হতাশা নিয়ে। শিশু কিংবা লাশ, কারোর মতামতই জানার সুযোগ নেই, আফসোস!!!

৭৫. দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মানুষদের আমার মাঝে মাঝেই ঈর্ষা হয়, ঈশ্বর তাদের ভালবেসেই মুক্তি দিয়েছেন। আমাদের মত প্রতিনিয়ত না দেখার ভান করতে হয় না, হিপক্রেসি করতে হয় না। দৃষ্টি শক্তি এবং বোধ সম্পন্ন হওয়া দুটোই খুব যন্ত্রণা দায়ক । অল্প কিছু মানুষ প্রতিনিয়তই এ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে জীবন শেষ করে।

৭৬. কোন মানুষের পক্ষেই “ভালো মানুষ” হওয়া সম্ভব না। ঈশ্বরের সৃষ্টি তত্ত্বে সেটা নেই। অনেক চেষ্টা আর ত্যাগ তিতিক্ষার পর কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব হলেও হতে পারে। 

৭৭. প্রেমানুভুতি এবং ক্ষুধানুভুতি ঈশ্বরের এর অসাধারণ কৌশলী কীর্তি। মানুষের ভাষা নেই তার যথার্থ ব্যাখা দেয়ার। মানুষকে শাসন এবং নিয়ন্ত্রন করার জন্য অন্য কোন অস্ত্রের প্রয়োজন নেই।

৭৮. কম বুদ্ধিমান মানুষেরাই সমস্যার সমাধান চায় মন থেকে। বুদ্ধিমানেরা কখনোই সমস্যার সমাধান চায় না। সমস্যা জিইয়ে রাখার মধ্যেই তাদের বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ঘটানোর সুযোগ তৈরি হয়।

৭৯. কেউ কেউ ফসল ফলাতে পারে আবার কেউ অন্যের ফসল ঘরে তুলতে পারে। দুটো গুন একই মানুষের মধ্যে পাওয়া খুবই ব্যতিক্রম।

৮০. মানুষ সুখগুলোকে ভোগ করে আর কষ্টগুলোকে উপভোগ করে। ভোগের মাত্রা স্বল্পস্থায়ী আর উপভোগের মাত্রা দীর্ঘস্থায়ী। কিন্তু দুটোই নিরবিচ্ছিন্নভাবে হয় না।

৮১. “অন্যেরা খুব কষ্টে আছে” এটা ভেবে/দেখে মানুষ সবচেয়ে বেশী আনন্দ পায়। একারনে মানুষের কষ্টের/দুঃখের বিষয়গুলোকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করে নিজের আনন্দের মাত্রা বাড়ানোর জন্য।

৮২. “দুঃখ বিলাসী কবিগন” যেভাবে মানুষের কষ্টকে/দুঃখকে/যন্ত্রণাকে/একাকীত্বকে ধারণ করতে পারেন, ছড়িয়ে দিতে পারেন তার কিয়দংশও সুখের ক্ষেত্রে পারে না।

অ্যাফোরিজম

অ্যাফোরিজম একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য যা সত্যকে একটি স্মরণীয় উপায়ে প্রকাশ করে। সত্য বা মতামতকে মজাদার পদ্ধতিতে বর্ণনা করতে এটি সত্যের বিষয়টিকে নিয়োগ করে। অ্যাফোরিজগুলি মাঝে মাঝে হাস্যকর হতে পারে। নীতি, সাহিত্যিক এবং দার্শনিক নীতিগুলিতে প্রায়শই অ্যাফোরিজম প্রয়োগ হয়। আমরা আমাদের প্রতিদিনের ভাষণেও এগুলি উদ্ধৃত করি।

এফোরিজমগুলি মূলগুলির কারণে ক্লিচ, অ্যাডেজ, প্রবাদ এবং অন্যান্য বাণী থেকে আলাদা। প্রতিটি অ্যাফোরিজমের একটি নির্দিষ্ট স্রষ্টা থাকে এবং সেগুলি প্রবাদ এবং খণ্ডগুলির মতো পুরানো নয়। আফোরিজম শব্দটি হিপোক্রেটিস দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। তিনি এফোরিজম নামক একটি বই লিখেছিলেন যাতে চিকিত্সার সত্যতার সংক্ষিপ্ত বিবৃতি ছিল। পরে অন্যান্য ক্ষেত্রের সত্যতা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এফরিজমের সংজ্ঞাটি প্রসারিত হয়।

অ্যাফোরিজমের উদাহরণ

“গতকাল কিন্তু আজকের স্মৃতি, এবং আগামীকাল আজকের স্বপ্ন” “-

“কল্পনা জ্ঞানের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ. জ্ঞান সীমাবদ্ধ। কল্পনা বিশ্বকে ঘিরে রেখেছে ”

 “আইন ও বিধিবিধানকে যত বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে, তত চোর এবং ডাকাত হবে।” –

সাহিত্যে অ্যাফোরিজমের উদাহরণ

“আপনি কখনই কোনও ব্যক্তিকে বুঝতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনি বিষয়টিকে তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেন – যতক্ষণ না আপনি তার ত্বকে উঠে তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।” – হার্পার লি রচিত 

আলেকজান্ডার পোপ 18 তম শতাব্দীতে এফোরিস্টের একজন দুর্দান্ত স্রষ্টা ছিলেন। শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলার এই অ্যাফরিজমটি তাঁর পরিচিত স্বর্ণের ট্রেজারি থেকে নেওয়া হয়েছে।

“কিছুই না থাকায় সে কিছুই হারাতে পারে না।” – শেক্সপিয়ারের ষষ্ঠ হেনরিশেক্সপিয়র তাঁর নাটকগুলিতেও অ্যাফোরিজম ব্যবহার করেছেন। এই অ্যাফোরিজম সর্বজনীন সত্যকে প্রতিফলিত করে যে যার কাছে কিছুই নেই সে কিছুই হারাতে পারে না।

Share:
0 0 votes
Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Nandik Shop